সৃষ্টি: সরস্বতী প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে কুমোরটুলিতে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুল-কলেজের দরজা। অথচ, আগামী মাসের শুরুতেই সরস্বতী পুজো। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই যে, এখনও পর্যন্ত প্রতিমার তেমন বায়নাই হয়নি কুমোরটুলিতে। ফলে মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের।
গত দু’বছরে অতিমারি আবহে আর্থিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে কুমোরটুলিও। দু’বছর ধরে কোনও প্রতিমারই বায়না সে ভাবে না মেলায় আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন মৃৎশিল্পীরা। করোনার আগে প্রতি বছরই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে সরস্বতী প্রতিমার প্রচুর বায়না আসত কুমোরটুলিতে। কিন্তু এ বার সেই সংখ্যা প্রায় শূন্য। কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সমিতির সম্পাদক কার্তিক পালের কথায়, ‘‘মূলত স্কুল-কলেজ ও নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই বেশি বায়না আসত আমাদের কাছে। কিন্তু করোনার জন্য এ বার সব বন্ধ থাকায় চিন্তা বাড়ছে।’’
মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল বলছেন, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে স্কুল-কলেজ ধীরে ধীরে চালু হতে শুরু করেছিল। ভেবেছিলাম, এ বার সরস্বতীর বায়নাটা অন্তত ভাল মিলবে। কিন্তু ফের তৃতীয় ঢেউ শুরু হতে চিন্তা বাড়ছে।’’ কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির সম্পাদক বাবু পালের গলাতেও একই আক্ষেপ— ‘‘করোনা পরিস্থিতির জন্য কুমোরটুলির শিল্পীদের অবস্থা শোচনীয়। জানুয়ারিতেই শিল্পীরা বহু বায়না পেতেন। কিন্তু এখনও আমাদের কাছে তেমন বায়নাই আসেনি।’’
মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, বছরের শুরুতে একমাত্র সরস্বতী পুজোই রয়েছে। এর পরে আবার সেই দুর্গাপুজো। ফলে সরস্বতী প্রতিমা বিক্রির দিকেই ভরসা করে তাকিয়ে ছিলেন শিল্পীরা। এক শিল্পীর কথায়, ‘‘সরস্বতী পুজোর পরে ফের সেই দুর্গাপুজো। মাঝে কোনও প্রতিমা তৈরির ব্যাপার নেই। সরস্বতীর বিক্রি বাড়লে শিল্পীদের একটু সুরাহা হত।’’
তবে অনেকেরই আশা, আগেভাগে বায়না না এলেও শেষ লগ্নে প্রতিমা কিনতে ভিড় হবে কুমোরটুলিতে। তাই প্রতিমা তৈরির কাজটা এগিয়ে রাখছেন তাঁরা। মৃৎশিল্পী বাবুর কথায়, ‘‘এই অবস্থায় প্রতিমা তৈরির কাজটা সেরে রাখছি। আশা করছি, পুজোর সপ্তাহখানেক আগে প্রতিমা নিতে ভিড় বাড়বে কুমোরটুলিতে।’’