প্রতীকী ছবি।
নিষেধ অগ্রাহ্য করে কলকাতা সংলগ্ন এলাকা-সহ সারা রাজ্যেই চলছে ফসলের গোড়া পোড়ানো। এ নিয়ে আগেও সরব হয়েছিলেন পরিবেশকর্মীরা। এ বার এই বিষয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে বুধবার একটি মামলা দায়ের হল।
শীতে এমনিতেই বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। সেই দূষণ আরও বাড়ে ফসলের গোড়া পোড়ানোয়। রাজ্য পরিবেশ দফতর আগেই এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তা সত্ত্বেও প্রতি পদে ওই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের। মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি, হাওড়া তো বটেই, এমনকি কলকাতা সংলগ্ন নিউ টাউন অঞ্চলেও ধারাবাহিক ভাবে ফসলের গোড়া পোড়ানো হয় বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা ও হাওড়ার বায়ুদূষণের উৎস সম্পর্কে জানতে এর আগে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-কে (নিরি) নিয়োগ করেছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। রাস্তার ধুলো, গাড়ির ধোঁয়া-সহ নিরির রিপোর্টে দূষণের একাধিক উৎসের কথা বলা হলেও ফসলের গোড়া পোড়ানোর উল্লেখ নেই বলেই জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা। এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘ফসলের গোড়া পোড়ানোর ফলে বায়ুদূষণের মাত্রা কত, তা জানার জন্য যতটা তৃণমূল স্তরে সমীক্ষার দরকার ছিল, সম্ভবত সেটা হয়নি। সে কারণেই তা জানা যায়নি।’’ অন্য এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এ বিষয়ে সমীক্ষার জন্য আইআইটি, দিল্লিকে নিয়োগ করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এখনও সেই রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি বা জনসমক্ষে আসেনি।’’
সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত ফসলের গোড়া পোড়ানোর বিষয়ে রাজ্যের তরফে একটি নজরদারি কমিটি তৈরির জন্য পরিবেশ আদালতে আবেদন করেছেন। তিনি জানাচ্ছেন, ফসলের গোড়া পোড়ানো নিয়ে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। সেখানে যেমন কৃষকদের সচেতন করে তোলার কথা বলা হয়েছে, তেমনই নিয়মভঙ্গকারীদের উপরে জরিমানা ধার্যের কথাও রয়েছে। ফসলের গোড়ার ক্ষেত্রে ঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য ‘ইনসেন্টিভ’ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সুভাষবাবুর মতে, ‘‘দুর্ভাগ্যের বিষয় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সরকারের তরফে এমন কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। ফসলের গোড়া পোড়ানোর জন্য দূষণ হয় জেনেও আমরা শুধুই দর্শক হয়ে রয়েছি।’’