হেনস্থার শিকার স্কুলশিক্ষিকা। প্রতীকী চিত্র।
কখনও তাঁর নামে ফেসবুকে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে আপত্তিকর ভিডিয়ো পাঠানো হচ্ছে পরিচিত জনেদের কাছে। কখনও ‘ডেটিং অ্যাপে’ তাঁর মোবাইল নম্বর পোস্ট করা হচ্ছে। ফলে, অজানা নম্বর থেকে লাগাতার ফোনে কুপ্রস্তাব পাচ্ছেন তিনি। পাঠানো হচ্ছে আপত্তিকর ভিডিয়ো। নেট-মাধ্যমে টানা এমন ভাবে হেনস্থায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন হাওড়ার নলপুরের একটি স্কুলের শিক্ষিকা।
বালির বাসিন্দা ওই শিক্ষিকার অভিযোগ, সম্প্রতি তাঁর নামে আপত্তিকর মন্তব্য লেখা একটি পোস্টার সাঁটা হয়েছে স্কুলের দরজায়। তিনি বলেন, ‘‘বালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু পরিত্রাণ মেলেনি। অগত্যা ঠিক করেছি, কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করব।’’ ওই শিক্ষিকার দাবি, গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে স্কুলেরই প্রাক্তন এক পড়ুয়া। সহপাঠীদের উদ্দেশে অশ্লীল ইঙ্গিত করায় তাকে ক্লাস থেকে বার করে দিয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগকারিণীর কথায়, ‘‘প্রথমে আমার মেয়ের নামে তাঁরই বান্ধবীদের ইনস্টাগ্রামে কুরুচিকর মন্তব্য করা হচ্ছিল। এর পরে বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপে আমার মেয়ের ছবি পোস্ট করা শুরু হয়। সেখানে আমার ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। তার পর থেকেই আমার মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিয়ো আসতে শুরু করে। ফোন করেও অশ্লীল মন্তব্য করা হয়। বহু বার ভিডিয়ো কল আসে অপরিচিত নম্বর থেকে। সমস্ত ঘটনাই থানায় জানিয়েছি।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘সম্প্রতি আমার নামে অশ্লীল ভাষায় পোস্টার লিখে সাঁটা হয়েছিল স্কুলের গেটে! এক জন সেটি দেখতে পেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দেন। স্কুলের সিসি ক্যামেরায় পোস্টার সাঁটার ছবি ধরা পড়েছে। কিন্তু যে ওই পোস্টার লাগিয়েছে, তাকে চেনা যায়নি।’’ সাইবার বিশেষজ্ঞ তথা আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়কেও সম্প্রতি তাঁর সমস্যার কথা জানিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। বিভাস বলেন, ‘‘সামাজিক সম্মানহানি হয়েছে ওই শিক্ষিকার। কলকাতা হাই কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হবে।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে বালি থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নিয়েছি। যে ছেলেটির নামে অভিযোগ, তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ফোন-সহ বিভিন্ন সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই শিক্ষিকার স্কুল আমাদের থানা এলাকার মধ্যে পড়ে না। তাই পোস্টার সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে আমাদের কিছু করণীয় নেই। ওঁর স্কুল যে থানা এলাকায়, সেখানেই অভিযোগ জানাতে হবে।’’