স্টেথো হাতেই আত্মরক্ষায় তাইকোয়েন্ডোর পাঠ

হায়দরাবাদের কাছে তরুণী পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও পুড়িয়ে মারার ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। ঘটনার পরে কলকাতায় এ বার লিয়া ভৌমিক, কৌশিকী রমন, নম্রতা গুপ্তেরা নিজেদের নতুন করে গড়ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৮
Share:

তাইকোয়েন্ডোর প্রশিক্ষণে চিকিৎসক ছাত্রী। বুধবার, এনআরএসে। নিজস্ব চিত্র

আত্মরক্ষার পাঠই বিপজ্জনক পরিস্থিতির মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে চিকিৎসক ছাত্রীদের।

Advertisement

হায়দরাবাদের কাছে তরুণী পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও পুড়িয়ে মারার ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। ঘটনার পরে কলকাতায় এ বার লিয়া ভৌমিক, কৌশিকী রমন, নম্রতা গুপ্তেরা নিজেদের নতুন করে গড়ছেন। ওঁদের কেউ চিকিৎসক। কেউ আবার চিকিৎসক হওয়ার পথে। পশু চিকিৎসক তরুণীর ওই ঘটনার পরে কলকাতার এই তরুণীরা চাইছেন একটি বার্তা দিতে। তা হল রোগীর জীবন বাঁচাতে যদি তাঁরা স্টেথোস্কোপ ধরতে পারেন, তবে নিজের সম্মান বাঁচাতে দুর্বৃত্তের উপরে সেই হাতে তাঁরা পাল্টা আঘাতও হানতে পারেন। তাই হাসপাতালের ভিতরেই চলা মার্শাল আর্ট তাইকোয়েন্ডোর ক্লাসে নিজেদের নতুন করে গড়া শুরু করেছেন ওঁরা।

বছর দুয়েক আগে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাসের উদ্যোগে কোরীয় মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। বুধবার এনআরএসের অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ে একতলার প্রেক্ষাগৃহে সেই প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রথম বর্ষের ছাত্রী লিয়া ভৌমিক বলেন, ‘‘এখানে ভর্তির পরে তাইকোয়েন্ডো শেখানোর বিষয়টি জানতে পারি। মার্শাল আর্ট শিখলে মানসিক ভাবে দৃঢ় হওয়া যায়। যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করার কৌশল আমার জানা।’’ আর এক ছাত্রী কৌশিকী জানান, হায়দরাবাদের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে হলে ভাবনায় বদল প্রয়োজন।

Advertisement

চিকিৎসক ছাত্রী নম্রতা গুপ্ত বলেন, ‘‘কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকব না। নিজেকে রক্ষা করতে পারি, এই আত্মবিশ্বাস এখন আছে।’’

প্রশিক্ষণ চলার সময়ে দেখা গেল, বিপদ এড়ানোর কৌশল শেখাচ্ছেন প্রশিক্ষক। তেমনই আবার পরিস্থিতি বুঝে পাল্টা দেওয়ার কৌশলও শেখাচ্ছেন ছাত্রীদের।

ওই দলের সদস্য স্ত্রীরোগ বিভাগের শিক্ষক অনুরাধা ফড়িকার। বয়সের কারণে প্রথমে খানিক জড়তা থাকলেও এখন একেবারেই নির্দ্বিধায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। একুশ বছরের চাকরিজীবন তাঁর। অনুরাধা বলেন, ‘‘বিপদের মোকাবিলা করার শক্তি আমার আছে। দরকার ছিল আত্মবিশ্বাসের। সেটা এখন আমার ভরপুর।’’

ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাস বলেন, ‘‘চিকিৎসক ছাত্রীদের দেখে নার্সিংয়ের ছাত্রীদেরও তাইকোয়েন্ডো শেখায় আগ্রহ বেড়েছে। তবে তাইকোয়েন্ডো শিখতে প্রচুর পরিশ্রমের প্রয়োজন।’’

গ্র্যান্ডমাস্টার তথা ‘সেভেন ডান’ ব্ল্যাক বেল্ট প্রদীপ্ত রায়ের বক্তব্য, ‘‘ভাবনায় বদল আনতে হলে স্কুল স্তর থেকে তাইকোয়েন্ডোর প্রশিক্ষণ জরুরি। তাইকোয়েন্ডো মানসিক দৃঢ়তা, শৃঙ্খলার পাঠ দেয়।

হায়দরাবাদের ঘটনার পরে এমন প্রশিক্ষণ নেওয়া মহিলাদের আরও বেশি করে প্রয়োজন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement