প্রতীকী ছবি।
দিন পনেরো আগে হাতে এসেছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। কিন্তু সেই কার্ড হাতে নিয়েও বুকে যন্ত্রণা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া বৃদ্ধ বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে শুক্রবার হন্যে হয়ে ঘুরতে হল ছেলেকে। বৃদ্ধের পরিজনেরা বলছেন, ‘‘যদি কোথাও ভর্তিই না হওয়া যায়, তা হলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মূল্য কী রইল!’’
বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই সমস্যা শুরু হয় নিউ আলিপুরের বাসিন্দা দিলীপকুমার দাসের। তড়িঘড়ি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, বৃদ্ধের অক্সিজেনের মাত্রা ৬২ শতাংশে নেমে গিয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। তাঁকে অবিলম্বে হৃদ্রোগের চিকিৎসার পরিকাঠামোযুক্ত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। দিলীপবাবুর পরিজনেরা জানান, স্থানীয় আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলেও চিকিৎসার সুযোগ মেলেনি।
বৃদ্ধের ছেলে সুদীপ্ত বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে কোন কোন হাসপাতাল রয়েছে, তার বই দেখে ভোর পাঁচটা নাগাদ ঢাকুরিয়ার আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ফোন করি। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা পেতে যা করতে বলা হল, তা অসম্ভব ছিল।’’
ওই যুবকের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানানো হয়, সকাল ৯টায় স্বাস্থ্যসাথী বিভাগ খুলবে। সেখানে গিয়ে আগে দেখাতে হবে কার্ডটি সচল কি না। তার পরে রোগীর নাম নথিভুক্ত করিয়ে আসতে হবে। শয্যা ফাঁকা হলে ডেকে নেওয়া হবে। সুদীপ্ত বলেন, ‘‘১৫ দিন আগে কার্ডটি পেয়েছি বলা হলেও ওঁরা কোনও কথা শুনতে চাননি। মুকুন্দপুরের আর একটি হাসপাতাল থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়, স্বাস্থ্যসাথীর শয্যা ফাঁকা নেই।’’
অগত্যা আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে দিলীপবাবুকে ভর্তি করেন পরিজনেরা। এ দিন দুপুরের মধ্যে সেখানে এক লক্ষ টাকা বিল হয়। সুদীপ্ত বলেন, ‘‘ওই হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় না থাকায় স্বাস্থ্য বিমার এক লক্ষ টাকাই দিয়ে দেওয়া হয়। এর থেকে বেশি খরচের সামর্থ্যও আমাদের নেই। তাই অন্যত্র খোঁজ করতে শুরু করি।’’
বৃদ্ধের পরিজনদের বক্তব্য, ‘‘বিধানসভায় বাজেট ঘোষণায় যখন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে, তখন অসুস্থ বৃদ্ধকে ওই কার্ডে কোথায় ভর্তি করা যায়, তা নিয়েই আমাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। এমন হলে ওই কার্ডের কী দরকার?’’