শুভঙ্কর তালুকদার।
বন্দুকধারী তালিবান কাবুলের দিকে যত এগিয়েছে, বারাসতের ন’পল্লির বাড়িতে ততই বেড়েছে উৎকণ্ঠা। এর কয়েক দিনের মধ্যে কাবুল পুরোপুরি তালিবানের দখলে চলে যেতেই আতঙ্কে ঘুম উড়ে যায় গোটা পরিবারের। মাঝের কয়েক ঘণ্টায় কোনও ভাবে যোগাযোগ করতে না পারায় সেই আতঙ্ক আরও বাড়ে। তবে বুধবার সন্ধ্যায় ছেলের সঙ্গে কথা বলার পরে কিছুটা হলেও আতঙ্ক কেটেছে আফগানিস্তানে আটকে পড়া শুভঙ্কর তালুকদারের পরিবারের।
বারাসতের ন’পাড়ার বাসিন্দা শুভঙ্কর আমেরিকার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। মাস চারেক আগে কাজের সূত্রেই আফগানিস্তানে যান তিনি। ওই দেশে সম্প্রতি তালিবানের দাপট বাড়লেও কাবুলে কিছু হবে না বলেই বিশ্বাস ছিল শুভঙ্কর-সহ আরও বেশ কয়েক জন ভারতীয়ের। কিন্তু দিনকয়েকের মধ্যেই তালিবান কাবুল নিজেদের হাতে নিয়ে নেওয়ায় সেখানেই আটকে পড়েছেন শুভঙ্কর।
এ দিকে, তিনি বাড়ি ফিরতে না পারায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে গোটা পরিবার। তবে বুধবার সন্ধ্যায় শুভঙ্করের সঙ্গে কথা হয় বাবা-মায়ের। বৃহস্পতিবারও তাঁরা কথা বলেছেন। ছেলের সঙ্গে কথা বলে খানিকটা দুশ্চিন্তামুক্ত বাবা স্বপন তালুকদার। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। শুভঙ্কর নিরাপদেই আছে। একসঙ্গে একই জায়গায় ৫০-৬০ জন রয়েছে। বিমান পেলেই ভারতে চলে আসবে।’’ ইতিমধ্যেই বারাসত পুরসভার তরফে শুভঙ্করের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁর পাসপোর্ট নম্বর এবং তিনি কোথায় রয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হয়েছে।
দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছেলেকে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছেন স্বপনবাবু। ছেলের জন্য প্রবল দুশ্চিন্তায় শুভঙ্করের মা-ও। তবে ফোনে কথা বলতে পারায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা। কথা হয়েছে ভিডিয়ো কলেও। শুভঙ্কর তাঁদের জানিয়েছেন, কাবুলে ঠিক মতো খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। আর বাড়ির বাইরে বেরোতে হচ্ছে খুব বুঝেশুনে। বিমান পেলেই তিনি বাড়ি ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছেন। তবে সেই বিমান কবে পাওয়া যাবে, তা তিনি জানেন না। আগামী ২৪ তারিখ বিমান পাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে বলে পরিবারকে জানিয়েছেন শুভঙ্কর। আপাতত সেই আশাতেই দিন গুনছে বারাসতের তালুকদার পরিবার।