প্রতীকী ছবি
বেহালার ঠাকুরপুকুরে ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ৭১ বছরের পরিমল সাহার মৃত্যু হয়েছে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। এ বার সুপ্রিম কোর্টে ওই মৃত্যুর তদন্তের দাবি উঠতে চলেছে। পরিমলের পরিবারের অভিযোগ, বিজেপি সমর্থক বলেই মিথ্যা মামলায় পরিমল ও অন্যদের ফাঁসানো হয়েছিল। জেলবন্দি অবস্থায় ঠিকমতো চিকিৎসা না হওয়ার ফলেই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরিমলকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সোমবার সেখানে পরিমলের মৃত্যুর পরে বেহালার বাছারপাড়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে ঠাকুরপুকুর থানার কর্তারা জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, মঙ্গলবারও এলাকায় উত্তেজনা ছিল। সেই কারণে পরিমলের দেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পুলিশ প্রথমে আপত্তি জানালেও পরে অনুমতি দেওয়া হয়। দেহ বাড়িতে নেওয়ায় অবশ্য কোনও গোলমাল হয়নি।
কলকাতা হাইকোর্টে জামিন না পেয়ে পরিমল সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন। গত ১৭ জুলাই শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করে। ৩১ জুলাই শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য হয়। তার আগেই পরিমলের মৃত্যুর পরে তাঁর আইনজীবী পীযূষ রায় বলেন, ‘‘বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পরিমলবাবুর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্য ৩১ তারিখ তাঁর পরিবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানাবে।’’
ঘটনার সূত্রপাত গত জানুয়ারি মাসে, ঠাকুরপুকুরের বাছারপাড়ায় অশোক স্মৃতি সঙ্ঘের পিকনিকে। পিকনিকের সময়ে ক্লাবের সদস্যদের উপরে ১২ জন বিজেপি সমর্থক লাঠি, বাঁশ নিয়ে চড়াও হন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, ৭১ বছরের পরিমল সাহা হামলাকারীদের দলেই ছিলেন বলে অভিযোগ। ক্লাবের সদস্যেরা সকলেই তৃণমূল সমর্থক বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। ওই হামলায় ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক যুবক মাথায় চোট পেয়ে সংজ্ঞা হারান। তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই ১২ জনের বিরুদ্ধে প্রথমে খুনের চেষ্টা ও অন্যান্য অভিযোগে ঠাকুরপুকুর থানায় এফআইআর দায়ের হয়। হাসপাতালে ভাস্করের মৃত্যু হলে খুনের মামলা রুজু হয়। পুলিশ অভিযুক্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করে। আদালতের নির্দেশে ধৃতদের প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়।
জেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরিমলকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়েছিল। বিচারবিভাগীয় হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনার যাবতীয় নিয়ম মেনেই প্রক্রিয়া এগোবে।
আরও পড়ুন: ‘হাল না-ছেড়ে ভেবেছি, এই যুদ্ধে জিততেই হবে’