প্রতীকী ছবি।
গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের মুন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পরে কেটে গিয়েছে কুড়ি দিনেরও বেশি। সেই অগ্নিকাণ্ডের জেরে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল শামিম বেগম নামে এক বাসিন্দার। উদ্ধারকাজের সময়ে ছাদ থেকে পা পিছলে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ইউনেস রহমান নামে এক কিশোরেরও। অভিযোগ, তার পরেও বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। দমকলের তরফে কোনও অভিযোগ জমা পড়েছে কি না, তা-ও জানা নেই মৃতদের পরিবারের।
ওই বাড়ির আবাসিকেরা থানা বা দমকলের কাছে কিছু জানতে চাইলে কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে অভিযোগ। ফলে হতাশ হয়ে ইউনেসের বাবা ছেলের মৃত্যুর জন্য বাড়ির মালিককে দায়ী করে একটি অভিযোগ জমা করেছেন। অন্য দিকে, মায়ের পারলৌকিক কাজ মিটলেই তিনিও আলাদা একটি অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন শামিম বেগমের ছেলে হাবিব মোল্লা।
গত ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে ২১ গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের মুন ভবনে আগুন লাগে। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় সেই আগুন আয়ত্তে আনলেও মৃত্যু হয় দু’জনের। পাঁচতলায় ছেলে-বৌমা এবং নাতির সঙ্গে থাকতেন বছর পঁয়ষট্টির শামিম বেগম। আগুন লাগার পরে বাসিন্দারা যখন মরিয়া হয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন, তখন মায়ের হাত ধরে বেরিয়ে আসেন হাবিব। সঙ্গে হাবিবের স্ত্রী ও সন্তান। সকলে হুড়োহুড়ি করে ছাদে ওঠার সময়ে শামিমের হাত ফস্কে যায়। অন্ধকার, ধোঁয়া আর আগুনের হলকার মধ্যে মাকে আর খুঁজে পাননি হাবিব। কয়েক ঘণ্টা পরে দমকল এক বৃদ্ধাকে অচৈতন্য অবস্থায় বার করে আনে। কিন্তু তত ক্ষণে ঝলসে গিয়েছিল শামিমের দেহ।
ওই ঘটনার পরে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ এবং স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, একতলায় সিঁড়ি সংলগ্ন মিটার থেকে আগুন প্রথমে লাগে পাশে রাখা মোটরবাইকগুলিতে। তাতেই আগুন বড় আকার নেয়। ফরেন্সিকের রিপোর্টেও সেই কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, প্রাথমিক ভাবে আগুনের উৎস জানার পরেও কেন পুলিশ নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করে মালিককে গ্রেফতার করল না। দমকলই বা কেন অভিযোগ করেনি, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
নিয়ম অনুযায়ী, আগুনের উৎস জানার পরেই দমকল একটি অভিযোগ জমা করে। কিন্তু এই ঘটনার ক্ষেত্রে সেই অভিযোগ জমা পড়েছে কি না, তা দমকলের অধিকর্তা জগমোহনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, খোঁজ নিয়ে জানাবেন। পরে তাঁর মোবাইল বেজে গিয়েছে। মেসেজের কোনও উত্তর মেলেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ফরেন্সিকের রিপোর্ট সদ্য জমা পড়েছে। রিপোর্ট দেখে পদক্ষেপ করা হবে।