প্রতীকী ছবি।
শুধু প্রতারণা নয়, এক জনকে খুন করারও পরিকল্পনা করেছিল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ভুয়ো আইপিএস রাজর্ষি ভট্টাচার্য। এর জন্য ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করার কথাও ভেবেছিল সে। তদন্তকারীদের অনুমান, সেই ভাড়াটে খুনির সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য রাজর্ষিকে সাহায্য করেছিলেন কলকাতা পুলিশের দুই কর্মী। ভুয়ো আইপিএস-কাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই পরতে পরতে উঠে আসছে এমনই নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, নিজের ‘পথের কাঁটা’ সরাতেই এমন পরিকল্পনা করেছিল অভিযুক্ত।
আইনি জটিলতায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতারির হুমকি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে গত সোমবার পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে রাজর্ষিকে গ্রেফতার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। একই সঙ্গে ধরা হয় পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা মহম্মদ সিকন্দর ও হাওড়ার জগাছার অভিজিৎ দাস ওরফে সন্তুকে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারেন গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রের খবর, নিজেকে আইপিএস হিসেবে পরিচয় দিয়ে পার্ক স্ট্রিট থানার এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর এবং কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলের সঙ্গে ভাব জমিয়েছিল রাজর্ষি। ওই দুই পুলিশকর্মী রাজর্ষিকে আসল আইপিএস অফিসার বলেই ধরে নিয়েছিলেন। আর সেই সুযোগে নিজের কাজ হাসিল করতে এক ব্যক্তির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করে অভিযুক্ত। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এএসআই এবং কনস্টেবলের সাহায্যও চেয়েছিল সে।
তদন্তে পুলিশ আরও জেনেছে, রাজর্ষির এক বিশেষ পরিচিতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন ওই ব্যক্তি। যা রাজর্ষির পছন্দ ছিল না। সূত্রের খবর, যোগাযোগ বন্ধ করার জন্য ওই ব্যক্তিকে একাধিক বার হুমকিও দিয়েছিল অভিযুক্ত। কিন্তু তার পরেও যোগাযোগ রেখে চলায় ‘পথের কাঁটা’ সরাতে ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করে ওই ব্যক্তিকে খুনের পরিকল্পনা করে ভুয়ো আইপিএস। তদন্তকারীরা জেনেছেন, ভাড়াটে খুনির খোঁজ পেতে একাধিক জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রাজর্ষি। তার সেই কাজে ওই দুই পুলিশকর্মীর ভূমিকা ছিল কি না, সেটা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রয়োজনে তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই ওই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে লালবাজার।