যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে এল উচ্চ শিক্ষা দফতরের গঠিত তিন সদস্যের সত্যানুসন্ধান দল। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর সঙ্গে কথা বলেন ওই দলের সদস্যেরা। প্রায় তিন ঘণ্টা চলে বৈঠক। বৈঠক শেষে দলের এক সদস্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতি খুঁজতে তাঁরা সেখানে যাননি। প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় সাত দিনের মধ্যে ওই দলকে রিপোর্ট দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে উচ্চ শিক্ষা দফতরকে রিপোর্ট দেবে সত্যানুসন্ধান দল। অন্য দিকে, সেনার উর্দি পরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশের ঘটনায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের পর সদস্য জয়শ্রী রায়চৌধুরী জানান, সার্বিক পরিকাঠামোর খোঁজ নিতেই সেখানে গিয়েছেন তাঁরা। অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি, কেমন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়, এ সব নিয়েই খোঁজ নিয়েছেন তাঁরা। তবে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি খুঁজতে তাঁরা যাননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা গাফিলতি খুঁজতে আসিনি। আমরা দেখতে এসেছি প্রশাসনিক ত্রুটিবিচ্যুতি এবং পরিকাঠামোগত ত্রুটিবিচ্যুতি। তথ্য পেলে সেটা নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারব।’’
গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে যান প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, ছাত্রের মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে র্যাগিং। গত ১৭ অগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রুটি খুঁজতে একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে উচ্চশিক্ষা দফতর। উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ওই ছাত্র র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখছে। পাশাপাশি, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু প্রশাসনিক ত্রুটি এবং পরিকাঠামোগত ফাঁকফোকর রাজ্য সরকারের নজরে এসেছে। সেই গলদগুলি খুঁজে বার করা এবং সমস্যার সমাধান করার উদ্দেশ্যে উচ্চ শিক্ষা দফতর একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে। সেই দলই মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে গেল।
এ দিকে যাদবপুরে সেনার উর্দি পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক। চম্পাহাটি থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হয়েছে তাঁকে। ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযোগ, সেনার উর্দি পরে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের সেই পোশাক সরবরাহ করেছিলেন ধৃত। পাশাপাশি অভিযোগ, ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলেন ধৃত নির্মল মণ্ডল। যদিও নির্মল দাবি করেছেন, তাঁকে কাপড় দিয়ে পোশাক তৈরি করতে বলা হয়েছিল। তিনি কিছু জানেন না।
মঙ্গলবার যাদবপুরের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের সঙ্গে দেখা করেন এনসিসি এডিজি মেজর জেনারেল বিবেক ত্যাগী। পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এনসিসির কার্যকারিতা নিয়ে চলে আলোচনা।