আরজি করের ঘটনায় ‘ভরসা রাখুন’ পোস্ট কলকাতা পুলিশের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি কর-কাণ্ডে জনমনের ক্ষোভ দূর করতে আসরে নামল কলকাতা পুলিশ। সোমবার বেলায় একটি নাতিদীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে পুলিশের উপর ভরসা রাখার আর্জি জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি লালবাজারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, দ্রুত ন্যায়বিচার হবে।
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে যুবতী চিকিৎসককে কর্তব্যরত অবস্থায় ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় গোটা রাজ্যেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাজ্যের বহু সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সাধারণ কিংবা আপৎকালীন, সব বিভাগেই পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। আন্দোলন করছে একাধিক নাগরিক সংগঠনও। ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ শিরোনাম-সহ একটি পোস্টার ছড়িয়ে পড়ছে সমাজমাধ্যমে। পোস্টারটির নীচে লেখা ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’।
এই আবহে কলকাতা পুলিশের ‘ভরসা রাখুন’ পোস্টকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। পোস্টে লেখা হয়েছে, “আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে চিকিৎসক তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে, এই কঠিন সময়ে আমরা সর্বান্তঃকরণে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে আছি। এই ঘটনায় মানুষের ক্ষোভ, শোক, রাগ অত্যন্ত স্বাভাবিক, বিশেষ করে চিকিৎসক সমাজের এবং মৃতার পরিজনদের। এই ক্ষোভ-শোক-ক্রোধের নতমস্তক শরিক আমরাও। এই যন্ত্রণা বর্ণনাতীত।”
প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডে তদন্ত করছে লালবাজারই। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার গ্রেফতার হয়েছেন। যদিও বিরোধী দল এবং সংগঠনগুলির অভিযোগ, ‘আসল অপরাধীদের’ আড়াল করা হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, “আমাদের তদন্ত চলছে আন্তরিক সততা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে। এই নারকীয় ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা এক জনকে গ্রেফতার করেছি তথ্যপ্রমাণ-সহ। আরও কেউ ঘটনায় জড়িত ছিল কি না, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে।”
‘ফেক নিউজ়’ বা মিথ্যা খবর নিয়েও সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছে লালবাজার। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া খবর বা কোনও তথ্য আগে যাচাই করা এবং গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, মিথ্যা তথ্য এবং গুজবের কারণে তদন্তের গতি ব্যাহত হবে। পোস্টের একেবারে শেষে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের উদ্দেশে লেখা হয়েছে, “আমরা বুঝতে পারছি আপনাদের শোক, সমর্থন করছি আপনাদের ন্যায়বিচারের দাবি। আপনাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। বিশ্বাস রাখুন, যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।” রাজ্যের মানুষের প্রতি লালবাজারের বার্তা, তদন্ত ‘সঠিক পথেই’ এগোচ্ছে।