প্রতিবাদী: বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে হর্ষ মান্দের ও জহর সরকার (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয়)। নিজস্ব চিত্র
ভারতে এনআরসি, সিএএ বা এনপিআর-এর প্রয়োজন নেই বলে এ বার জনগণের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখলেন ১০৬ জন প্রাক্তন আমলা, পুলিশকর্তা ও রাষ্ট্রদূত। তাঁরা চান, নয়া নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়া আটকাতে কেরল বিধানসভায় যে ভাবে প্রস্তাব পাশ হয়েছে, এ রাজ্যেও সে ভাবে প্রস্তাব পাশ হোক।
চিঠিতে মূলত তিনটি দাবি তোলা হয়েছে। প্রথমত, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলের শেষ মাসে আচমকাই তাড়াহুড়ো করে ভারতের নাগরিকত্ব আইনের মৌলিক পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই সময়ে সংশোধনীতে যে ১৪এ এবং ১৮ (২) (আইএ) ধারা যুক্ত হয়েছিল, তার জেরেই ভারতে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। ওই সংশোধনীগুলি বাতিল করা হোক। দ্বিতীয়ত, ২০১৯-এর বিদেশি ট্রাইবুনাল সংশোধনী অর্ডার এবং সেই অনুযায়ী যে শরণার্থী শিবিরের কথা বলা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করা হোক। তৃতীয়ত, নয়া নাগরিকত্ব আইন বাতিল করা হোক। ওই চিঠিতে সই করা প্রাক্তন আমলা জহর সরকার বলেন, ‘‘মানুষের উপরে জুলুম করা হচ্ছে। বেছে বেছে কিছু মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করা হচ্ছে আসল সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে।’’
বৃহস্পতিবার নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় সাংবাদিক বৈঠক ডাকে ‘ফোরাম ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড কমিউনাল অ্যামিটি’ (এফডিসিএ)। সেখানে জহরবাবুর সঙ্গে ছিলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন আইএএস হর্ষ মান্দের। হর্ষ বলেন, ‘‘কেরল বিধানসভায় নয়া নাগরিকত্ব আইন চালু হতে না দেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। আশা করি, বাংলার সরকারও বিধানসভায় প্রস্তাবটি পাশ করাবেন।’’ তিনি আরও জানান, কেন্দ্রের কোনও আইন যদি রাজ্য বলবৎ করতে না চায়, তা হলে সাংবিধানিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে। কেন্দ্র তখন রাজ্যের সরকার ভেঙেও দিতে পারে। হর্ষ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন্দ্র কত রাজ্য ভাঙবে আর কত বার ভাঙবে? এ লড়াই আমার মুসলিম ভাই-বোনেদের প্রতি যে অন্যায় হচ্ছে, তার প্রতিবাদ।’’ আজ, শুক্রবার নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় মিছিলে পা মেলাবেন হর্ষ।
জহরবাবুও বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার বলছে, নয়া নাগরিকত্ব আইন বলবৎ না করলে দেশের ক্ষতি হবে। কিন্তু আমরা, প্রাক্তন আমলারা সব জেনেই বলছি, এটি ভাঁওতা। যার কোনও প্রয়োজন নেই।’’