বাঁ দিকে, উদ্ধারকারী দম্পতি। ডান দিকে, উদ্ধার হওয়া তরুণী। —নিজস্ব চিত্র।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
সাহিত্যিক
এই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি বিরল। অত্যন্ত সাহসের পরিচয় দিয়েছেন ওই দম্পতি। অনেক দেশেই, এমনকি শুনেছি আমেরিকার মতো জায়গাতেও কেউ কাউকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন না। সেই জায়গায় এক দম্পতি নিজের জীবন বিপন্ন করে যে ভাবে এক তরুণীকে বাঁচালেন, ভাবা যায় না। আমি অভিনন্দন জানাই তাঁদের। তবে এটাও ঠিক যে, এখনকার মানুষ খুব হুজুগে। বরং কিছু হলে মারমুখী হয়ে এগিয়ে আসেন অনেকে। প্রকৃত বিপদ থেকে কাউকে উদ্ধার করতে আসেন না।
অনন্যা চক্রবর্তী
শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন
টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনে আমার সামনে এই রকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। আমিও এক তরুণীকে বাঁচিয়েছিলাম। সেটা ১৯৯২ সাল। পরে যা নিয়ে উপন্যাস এবং সিনেমাও হয়েছে। অন্যকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে না যাওয়াই আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়। ভাল লাগল শুনে যে, এক দম্পতি এ ভাবে জীবন বিপন্ন করে এক অচেনা তরুণীকে রাতের শহরে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন। অভিনন্দন তাঁদের। আর নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায় নামে ওই মহিলা, যিনি এ ভাবে জীবন বিপন্ন করে এক তরুণীকে বাঁচালেন, তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
অভিজিৎ মিত্র
সমাজতত্ত্ববিদ
এটাই স্বাভাবিক মানবসত্তা। তবে জীবন বিপন্ন করে যাঁরা অন্যের পাশে দাঁড়ান বা দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের পাশে রাষ্ট্রেরও দাঁড়ানো উচিত। রাষ্ট্রের উচিত এই বার্তা দেওয়া যে, এই সাহসী মানুষগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের। সাধারণত হেনস্থার ভয়ে অনেকে এগিয়ে আসেন না। ফলে নিরাপত্তার আশ্বাস পেলে আমার মনে হয়, ভবিষ্যতে কখনও এমন পরিস্থিতি হলে বা এমন ঘটলে আরও অনেকে এগিয়ে আসবেন।
গৌতমমোহন চক্রবর্তী
প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার
দম্পতি অসম্ভব সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। এখন পুলিশের কাজ হল যত দ্রুত সম্ভব অভিযুক্তকে ধরে আইনের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা। তাতে মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ বাড়বে। তবে এটুকু বলব, শহরের নতুন যে জায়গাগুলি কলকাতা পুলিশের আওতায় এসেছে, সেখানে রাতে নজরদারি বাড়ানো হোক। আর একটা কথা। ভাল নাগরিক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে গেলে হেনস্থা হতে হবে, এখন কিন্তু আর সেই ভয় পাওয়ার কারণ নেই। কারণ সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ রয়েছে, কোনও ভাবে ‘গুড সামারিটানকে’ হেনস্থা করা যাবে না।