Drinking Water Crisis

গরমে পানীয় জলের জোগান বৃদ্ধি করেও অপচয় রোখা যাচ্ছে না, পুর অধিবেশনে ক্ষুব্ধ মেয়র ফিরহাদ হাকিম

গ্রীষ্মে পানীয় জল সরবরাহ তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়ে চাহিদা খানিকটা মেটাতে সক্ষম হয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে পানীয় জলের অপচয় নিয়ে রীতিমত চিন্তায় পুর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ২১:০০
Share:

কলকাতায় পানীয় জলের অপচয় নিয়ে ক্ষুব্ধ মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ফাইল ছবি।

কোনও অবস্থাতেই রোখা যাচ্ছে না শহরবাসীর পানীয় জল অপচয়ের অভ্যাস। এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে পানীয় জলের অপচয় নিয়ে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে প্রশ্ন তোলেন। সেখানেই গ্রীষ্মকালে পানীয় জলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নিজের মতামত স্পষ্ট করেন মেয়র। নিজের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশও করেন তিনি।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘‘জলের চাহিদা মেটাতে সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এ রকম গরমে, যখন জলস্তর নেমে যায়, সে রকম একটা সময়ে জলের অপচয় করা ঠিক নয়। মাথাপিছু যেখানে ১৫০ লিটার জল খরচ করা উচিত। সেখানে গরমের জন্য স্বাভাবিক ভাবে খরচ বেড়েছে।’’ ফিরহাদ আরও বলেন, ‘‘পানীয় জলের‌ অপচয় রুখতে পুরসভা থেকে উত্তরে ১ থেকে ৬টা ওয়ার্ডে ওয়াটার মিটার বসানো হয়েছে। দক্ষিণের পাটুলি সংলগ্ন ৫ ওয়ার্ডে ওয়াটার মিটার লাগানো হয়েছে। এ বার কোথাও মিটার চুরি তো কোথাও ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ আসছে। পুরসভার এত চেষ্টা সত্ত্বেও পুরোপুরি সফল হওয়া যাচ্ছে না। কোথাও নাগরিক সচেতনতার অভাব থেকে যাচ্ছে।’’ কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, গরম পড়তে না পড়তেই কলকাতায় এক দিকে যেমন পানীয় জলের চাহিদা বেড়েছে, তেমনই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অপচয়ের পরিমাণ। গ্রীষ্মে পানীয় জল সরবরাহ তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়ে চাহিদা খানিকটা মেটাতে সক্ষম হয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে পানীয় জলের অপচয় নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পুর কর্তৃপক্ষ।

অধিবেশন শেষে মেয়রের বক্তব্য প্রসঙ্গে পানীয় জল সরবরাহ দফতরের আধিকারিক বলেন, ‘‘গরমে পানীয় জলের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই সরবরাহও বাড়ানো হয়। এখন ৫১৫ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ করা হচ্ছে। গরমে মাটির নীচে জলের স্তর নেমে যায়। কিন্তু মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরবরাহ বাড়ানো হয়। এ বারও সরবরাহ তিন গুণ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এ রকম অবস্থায় জলের অপচয় কাম্য নয়।’’ মেয়রের ক্ষোভ প্রকাশকে যুক্তিযুক্ত বলেছেন তিনি। পুরসভা সূত্রের খবর, জলের মিটার চুরির ঘটনায় কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানানো হচ্ছে। আবার সেখানে মিটার লাগানো হচ্ছে বটে। কিন্তু অপচয় রোখা একা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই কলকাতাবাসী যত দিন না পানীয় জল নিয়ে সচেতন হবেন, তত দিন পানীয় জলের চাহিদা গ্রীষ্মকালে মেটানো সম্ভব নয়।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের পানীয় জল অপচয় রোধের পন্থা বলে দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির কল সর্বদা ভাল করে বন্ধ রাখতে হবে। সারা দিনে যাতে এক ফোঁটা জল অপচয় না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পাম্প চালিয়ে খেয়াল রাখতে হবে, ট্যাঙ্ক ভর্তির পর যাতে জল যেন বাইরে পড়ে না যায়। পাইপ কোথাও ফাটা বা ভাঙা আছে কি না সে দিকেও সজাগ নজর রাখতে বলা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার পানীয় জল বিভাগের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শহরে পানীয় জলের স্তর নামতে শুরু করেছে। তাই সচেতন না হলে শহরের জলসঙ্কট আগামী দিনে আরও করুণ আকার ধারণ করতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement