বাগুইআটির চালপট্টিতে বিক্রি হচ্ছে বাজি। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
ভূত চতুর্দশীর সকাল থেকেই পাড়ায় পাড়ায় শব্দবাজি ফাটতে শুরু করেছিল বিধাননগরে। রাতের দিকে যার মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। সরকারি ভাবে বিধাননগরে কাউকে বাজি বিক্রির অনুমতি দেওয়া না হলেও অনেকেই আলো বা প্রদীপের ব্যবসার আড়ালে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। রাতের দিকে বিভিন্ন জায়গা থেকে অবিরাম বাজি ফাটানোর অভিযোগ আসতে থাকে। বিধাননগরের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার অবাধেই বাজি বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। যদিও পুলিশ তা সরাসরি স্বীকার করেনি।
বিধাননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন বাজি বিক্রির আবেদনপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। কিন্তু বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার এক জন ব্যবসায়ীও সেই বিজ্ঞপ্তিতে সাড়া দিয়ে বাজি বিক্রির অনুমতি প্রশাসনের থেকে চাননি। যে কারণে সবুজ বাজি-সহ সব ধরনের বাজির বিক্রিই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেখানে। কিন্তু তাতে বাজির কেনাবেচা আটকানো যায়নি। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা সবুজ বাজি নিয়ে সর্বাত্মক প্রচার করেছিলাম। যে হেতু কেউই বাজি বিক্রির অনুমতি নেননি, ফলে সব ধরনের বাজি বিক্রিই বিধাননগরে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। এর পরেও বাজি বিক্রি হচ্ছে জানতে পারলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’
প্রতি বছরই সল্টলেকের বিভিন্ন ব্লকের বাজারের বাইরে বাজির পসরা সাজিয়ে বসতে দেখা যায় খুচরো বিক্রেতাদের। বাগুইআটি, জ্যাংড়া, জগৎপুরের মতো এলাকায় কালীপুজোর আগে বাজির রমরমা ব্যবসা চলে। শনিবারও ওই সমস্ত এলাকায় কিছু বাজির দোকান চোখে পড়েছে। সল্টলেকের দত্তাবাদ, বৈশাখী ও রাজারহাটেও বাজি বিক্রি হয়েছে বলে খবর। যার মধ্যে শব্দবাজিও ছিল। জগৎপুর বাজারের এক ব্যবসায়ী যদিও বললেন, ‘‘গত বছরের বাজি মজুত ছিল অনেকের কাছে। সে সবও পুলিশ আটক করে নিয়ে গিয়েছে। তাই এ বার বাজি আনতে ভয় পেয়েছেন অনেকে। তার উপরে আসল সবুজ বাজি আর জাল সবুজ বাজি ঘিরে সংশয় ও পুলিশি ঝামেলার ভয়ও রয়েছে।’’
এ দিন সল্টলেকের ইসি ব্লকে দুই বালক শব্দবাজি ফাটাচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়ে সেখানে ছোটে বিধাননগর (উত্তর) থানার পুলিশ। যদিও পুলিশের দাবি, সেগুলি ছিল সবুজ বাজি। তাই পুলিশ ওই সব বাজি আটক না করেই ফিরে আসে। শুক্রবার নারায়ণপুর থানা এলাকায় ৪৫ কেজি বাজি আটক করেছিল পুলিশ, আবাসিক বাড়ি থেকে। তাই নিষিদ্ধ বাজি যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়, সে ব্যাপারে সংশয় নেই। কমিশনারেটের যদিও দাবি, সবুজ বাজি দামি। তাই খুচরো ব্যবসায়ীদের সিংহভাগই এ বারে বাজি বিক্রি করতে পারেননি।
তা হলে পাড়ায় পাড়ায় দুমদাম শব্দে যা ফাটছে, সে সব কী? কমিশনারেটের এক কর্তার কথায়, ‘‘সে সব বাজি বিধাননগরে কেনাবেচা হয়েছে কি না, তার নিশ্চয়তা নেই। আমাদের কাছে খবর এলেই হানা দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে এ বার বিধাননগরে প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে না।’’ পুলিশের এই দাবি অবশ্য বাস্তবের সঙ্গে মিলছে না।