মুখ ঢেকেছে..: দমদমের বহু অংশে এখনও রয়ে গিয়েছে প্রচারের হোর্ডিং-ব্যানার। ছবি:স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
পুরভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরেই দু’টি ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হয়েছিল। যা দেখে এলাকার বাসিন্দারা ভেবেছিলেন, এ বার হয়তো ছবিটা বদলাবে। কিন্তু তার পরে বেশ কয়েক দিন কেটে গেলেও দমদমের বিভিন্ন জায়গায় এখনও বড় বড় হোর্ডিং, ব্যানার, ফ্লেক্স, এমনকি, রাস্তা জুড়ে অতিকায় নির্বাচনী তোরণও রয়ে গিয়েছে। কয়েকটি এলাকা থেকে অবশ্য হোর্ডিং-ফ্লেক্স ইতিমধ্যে খুলে নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এ বিষয়ে শাসকদল থেকে বিরোধী— সব পক্ষেরই দাবি, প্রচার-সামগ্রী খোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও রাস্তায় বেরোলেই সেই দাবির সঙ্গে বাস্তবের ফারাকটা চোখে পড়তে বাধ্য। এলাকাবাসীর বক্তব্য, নির্বাচনের আগে অনেক কথাই বলা হয়। কিন্তু পরে আর তা মানা হয় না। দীর্ঘকাল ধরে এমনটাই দেখে এসেছেন তাঁরা। এ বারে অন্তত ছবিটা বদলানোর একটা মৃদু আভাস মিলেছে। আপাতত সেটাই ভরসা।
তবে তাঁরা জানাচ্ছেন, দমদম রোড, যশোর রোড, মল রোড, গোরাবাজার, এমবি রোড, পি কে গুহ রোড-সহ দমদমের তিন পুর এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও অলিগলি জুড়ে এখনও রয়ে গিয়েছে পতাকা, ফেস্টুন, হোর্ডিং, ব্যানার, ফ্লেক্স। এমনিতেই বছরভর ওই তিন পুর এলাকার বিভিন্ন রাস্তার ধারে ছোট-বড় হোর্ডিং ও ব্যানার ঝুলতে দেখা যায়। যা সরানো হয় না। এ নিয়ে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে কাজিয়াও বেধেছিল।
দমদম পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী বরুণ নট্টের অবশ্য দাবি, ফল ঘোষণার দিন বিকেল থেকেই তাঁর এবং অন্য কয়েকটি ওয়ার্ডে রাজনৈতিক পোস্টার, ব্যানার ও পতাকা খোলার কাজ শুরু হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে বিরোধীদের কাছেও প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানাবেন।
একই ভাবে ফল ঘোষণার পরদিনই দক্ষিণ দমদমের আট নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করেছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। সেই ওয়ার্ডের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ মিত্রের দাবি, ওয়ার্ড থেকে তাঁর সমস্ত প্রচার-সামগ্রী খুলে ফেলা হয়েছে। ওই তিন পুরসভার আরও কয়েকটি ওয়ার্ডেও সেই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানালেন তিনি। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখনও বহু এলাকায় রাস্তা জুড়ে প্রচার-সামগ্রী রেখে দেওয়া হয়েছে।
উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন মুখ্য প্রশাসক তথা জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বিধান বিশ্বাস জানালেন, শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। কিছু জায়গায় প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। বাকি অংশে দ্রুত সেই কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। ওই পুরসভার পরাজিত বাম প্রার্থী সুনীল চক্রবর্তী জানালেন, তাঁরা প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করেছেন।
বাসিন্দারা বলছেন, দমদমের তিন পুর এলাকাই জনসংখ্যার চাপে হাঁসফাঁস করছে। সেই তুলনায় রাস্তার পরিসর অনেক কম। ওই সমস্ত ঘিঞ্জি এলাকা বছরভর এমনিতেই বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানারে ভরে থাকে। তার উপরে নির্বাচনী প্রচার-সামগ্রী যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। রাজনীতিকদের সদিচ্ছা না থাকলে সমস্যা কোনও দিনই মিটবে না।
সমস্যার কথা স্বীকার করে কংগ্রেস নেতা তাপস মজুমদার বললেন, ‘‘নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারে যতটা উৎসাহ দেখা যায়, পরে নির্বাচনী প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে তা দেখা যায় না। তবে আমরা খুব দ্রুত দলীয় প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে নেব।’’