আদিগঙ্গা। —ফাইল চিত্র।
আদিগঙ্গা সংস্কারের কাজ আগামী দু’বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ করার জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতেই রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। এই প্রকল্প শেষ করার জন্য আদালতের তরফে ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি তরফে সক্রিয়তাও শুরু হয়েছে। যদিও পরিবেশকর্মীদের একাংশের দাবি, যে গতিতে কাজ এগোনোর কথা, তা হচ্ছে না। তাঁদের আরও বক্তব্য, শুধুমাত্র সরকারি স্তরে সক্রিয়তার মাধ্যমে আদিগঙ্গার পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণও জরুরি।
সেই লক্ষ্যে আজ, মঙ্গলবার কেওড়াতলা শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় ‘আদিগঙ্গা পুনরুদ্ধার চাই’ কর্মসূচির আয়োজন করেছে পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’। প্রসঙ্গত, ২৪ সেপ্টেম্বর ছিল ‘বিশ্ব নদী দিবস’। প্রতি বছরই সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবারটি ‘বিশ্ব নদী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। সেই উপলক্ষে ১৭-২৪ সেপ্টেম্বর রাজ্যের সমস্ত নদীর সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার এবং তার গতিধারার স্রোত স্বাভাবিক ও অব্যাহত রাখার দাবিতে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল সবুজ মঞ্চ। সেই সূত্রেই তাদের আজকের কর্মসূচি। এ ব্যাপারে সোমবার সংগঠনের সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘‘এলাকার মানুষের সহযোগিতা ছাড়া আদিগঙ্গা দূষণমুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই তাঁদের সচেতন করার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তাঁদের নিয়ে আদিগঙ্গা সংলগ্ন এলাকা পরিক্রমার পরিকল্পনাও রয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, আদিগঙ্গার দূষণ রোধের আবেদন জানিয়ে পরিবেশ আদালতে একাধিক বার মামলা করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের তরফে গঙ্গারতির এলাহি আয়োজন করা হচ্ছে। তাতে টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ, আদিগঙ্গার পুনরুদ্ধারে যে গতিতে কাজ করা দরকার, তা হচ্ছে না। সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘আদিগঙ্গার একাংশ নালায় পরিণত হয়েছে। সব স্তরে সক্রিয়তা ছাড়া একে বাঁচানো অসম্ভব।’’
নদী বিশেষজ্ঞ সুপ্রতিম কর্মকার আবার এ বিষয়ে জানাচ্ছেন, আদিগঙ্গাকে পরিষ্কার করলেই যে গঙ্গা সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত হবে, তেমন নয়। আদিগঙ্গার দূষণ কমানো তার বেঁচে থাকার জন্যই প্রয়োজন। সুপ্রতিমের কথায়, ‘‘কলকাতার বাস্তুতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে আদিগঙ্গার দূষণ ধারাবাহিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’’
আদিগঙ্গার দূষণ রোধ সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা পুরসভার আইনজীবী পৃথ্বীশ বসু অবশ্য জানাচ্ছেন, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে আদিগঙ্গা সংস্কারের কাজ ঠিক গতিতেই এগোচ্ছে।