পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানালেন শীতকালে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গে দূষণের মূল কারণ হল বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ ভিন্ রাজ্য থেকে বয়ে আসা বাতাস। প্রতীকী ছবি।
শীতকালে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গে দূষণের মূল কারণ হল বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ ভিন্ রাজ্য থেকে বয়ে আসা বাতাস। সেই বাতাসে থাকা ভাসমান ধূলিকণায় দূষিত হচ্ছে এই শহরের বাতাস। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানালেন রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তাঁর কথায়, ‘‘মূলত ওই সব রাজ্যের ধুলো বাতাসের মাধ্যমে এই রাজ্যে ঢুকে দূষণ ঘটায়।’’
পরিবেশমন্ত্রী জানাচ্ছেন, কিছু দিন আগে রাজ্য পরিবেশ দফতর এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শীর্ষ কর্তারা কাঠমান্ডুতে ‘বিশ্ব ব্যাঙ্ক’-এর আয়োজনে পরিবেশ সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গিয়েছিলেন। সেখানেই এই বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। পরিবেশ দফতরের কর্তাদের দাবি, রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করার পাশাপাশি পড়শি রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তোলার পরামর্শও দিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বছরে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য, এমনকি, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে শহরে একটি বৈঠক করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেখানে বিশ্ব ব্যাঙ্কের বিজ্ঞানীরাও উপস্থিত থাকবেন বলে সূত্রের খবর। তবে এ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
মানস জানাচ্ছেন, আন্তঃসীমান্ত যে দূষণ হয়, তা মারাত্মক। ফলে দূষণ কমাতে গেলে অন্য রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা বাস্তবায়নের আগে সেই সংক্রান্ত প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দেওয়া হবে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা আগে আন্তঃরাজ্য সমন্বয়ের ব্যাপারে একটি নোট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেব। তিনি অনুমতি দিলে এই কাজ শুরু হবে। এমনিতেই ভিন্ রাজ্য থেকে বয়ে আসা দূষণ কমাতে সীমান্তে লম্বা গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’
দূষণের উৎস নির্ধারণে আরও একটি কাজ করবে পরিবেশ দফতর। তা নিয়ে এ দিনই রাজ্যের পরিবহণ দফতর এবং দিল্লি আইআইটি-র সঙ্গে বৈঠক হয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তাদের। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, নন-এসি সরকারি বাসে একটি সেন্সর লাগানো হবে। সেই সেন্সরে দূষণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। বাসটি যখন শহরে ঘুরবে, তখন ওই সেন্সরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার দূষণ সংক্রান্ত তথ্য উঠে আসবে। আপাতত সাতটি রুটকে চিহ্নিত করা হয়েছে এই পাইলট প্রকল্পের জন্য।
এ ছাড়াও সবুজ বাজি প্রস্তুতকারকদের আর্থিক অবস্থা, তাঁদের অসুবিধা ইত্যাদির কথা ভেবে রাজ্যে সবুজ বাজি তৈরির ক্লাস্টার তৈরি করা যায় কি না, সেই ক্লাস্টার তৈরি করতে গেলে প্রশাসনের সহযোগিতা-সহ সব পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।