মা উড়ালপুলে নিষিদ্ধ হতে পারে মোটরবাইক চালানো। ফাইল চিত্র
মা এবং এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলে বাইক চলাচল বন্ধ হতে পারে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, নতুন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র শুক্রবার লালবাজারে শহরের সব ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি এবং এসিদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে দিনের ব্যস্ত সময়েও ওই দুই উড়ালপুলে বাইক চলাচল বন্ধ করার বিষয়ে।
কখনও চিনা মাঞ্জার সুতোয় গলা কেটেছে চালকের, কখনও আবার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের নীচে পড়েছেন বাইকচালক। এ সবের জেরে মৃত্যুও হয়েছে। তাই মা এবং এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলে বাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়া হচ্ছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, শুক্রবারের ওই বৈঠকে শহরের যান চলাচল ব্যবস্থার উন্নতিতে ট্র্যাফিকের আধিকারিকদের কাছে পরামর্শ চান কমিশনার। ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক ওই দুই উড়ালপুলে মোটরবাইক চলাচলে নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ তোলেন। সূত্রের খবর, ওই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। এ নিয়ে সরকারের সম্মতি আদায় করতে প্রস্তাব লিখিত আকারে নবান্নে পাঠাবে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য আটকাতে রাত দশটা থেকে সকাল ছটা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন উড়ালপুলে দু’চাকার ওই যানকে উঠতে দেওয়া হয় না। তাতে রাতের শহরে মোটরবাইক দুর্ঘটনা অনেকটাই ঠেকানো গিয়েছে বলে দাবি ট্র্যাফিক পুলিশের। মা উড়ালপুলে চিনা ঘুড়ির মাঞ্জা থেকে দুর্ঘটনা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশের। ওই মাঞ্জার কারণে এক বাইকআরোহীর মৃত্যুও হয়েছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই উড়ালপুল থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হয়েছে একাধিক বাইকআরোহীর। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘মা উড়ালপুল এবং এ জে সি বসু রোডের নীচে রাস্তা চওড়া হয়েছে। তাই দিনের ব্যস্ত সময়ে ওই উড়ালপুলে বাইক ওঠা বন্ধ থাকলে যান চলাচলে তেমন কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।’’
কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে শহরের ট্র্যাফিক আধিকারিকদের সঙ্গে সৌমেন মিত্র শুক্রবার প্রথম বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি ট্র্যাফিক ব্যবস্থা কী ভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন। লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের রাস্তায় সাইকেলের জন্য পৃথক লেন তৈরি নিয়েও আধিকারিকদের ভাবতে বলেছেন কমিশনার। ধীর গতির যানবাহনের জন্যও পৃথক লেন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বড়বাজার, পোস্তার মতো এলাকায় ভ্যান-রিকশা বা গাড়ির জন্য পৃথক লেন করা হয়েছে। তা যাতে সর্বত্র চালু থাকে তার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
সুষ্ঠু ভাবে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে অটো-সহ অনুমতিহীন গাড়ির ক্ষেত্রে গার্ডগুলিকে কঠোর হতে বলা হয়েছে ওই বৈঠকে।
লালবাজার জানিয়েছে, শহরের মূল রাস্তার বদলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের গলির রাস্তায় কাজে বহাল করতে নির্দেশ জারি করেছেন কমিশনার। শহরের প্রায় প্রত্যেক ট্র্যাফিক গার্ডেই অর্ধেকের বেশি কনস্টেবল পদ খালি রয়েছে। তাই সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ড। এক পুলিশকর্তা জানান, বিষয়টি পছন্দ নয় সিপি-র। তিনি চান, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা গলি কিংবা স্কুলের সামনে কাজ করুন।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছেন, কমিশনার চান রাস্তায় থাকা ট্র্যাফিক বাহিনী সাধারণ মানুষের সঙ্গে সঠিক আচরণ করবে। তাতেই বাহিনীর মুখ উজ্জ্বল হবে। রাস্তায় কেউ বিপদে পড়ে সাহায্য চাইলে ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা যেন নিজেদের দায়িত্ব না এড়িয়ে যান, সেই নির্দেশও দিয়েছেন নতুন কমিশনার।