দিনভর তল্লাশি

হুমকি ই-মেল সাতসকালে, তটস্থ বিমানবন্দর

সাতসকালে ই-মেল খুলে চমকে উঠেছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরের ম্যানেজার। বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একটা মেল! তাতে চাওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ পাউন্ড।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০৪:৩২
Share:

Advertisement

সাতসকালে ই-মেল খুলে চমকে উঠেছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরের ম্যানেজার। বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একটা মেল! তাতে চাওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ পাউন্ড।

রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ পাওয়া ওই ই-মেলের জেরে কলকাতা বিমানবন্দরকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। পুলিশ-সূত্রের খবর: মেলটি ইংরেজিতে লেখা। যদিও তার ভাষা ও লেখার কায়দায় বিস্তর অসঙ্গতি। তাতে নিশ্চিত করে বলা হয়নি যে, কলকাতা বিমানবন্দরই উড়িয়ে দেওয়া হবে। তাই দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরকেও হুঁশিয়ার করা হয়েছে।

Advertisement

বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার সেল তদন্তে নামলেও রাত পর্যন্ত মেল প্রেরককে চিহ্নিত করা যায়নি। যে মেল অ্যাকাউন্ট থেকে সেটি পাঠানো হয়েছে, তার কোনও নির্দিষ্ট আইপি অ্যাড্রেস পাওয়া যাচ্ছে না। আইপি সাধারণত সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থায় নথিভুক্ত থাকে। এ ক্ষেত্রে সেটি কারও কাছে নথিভুক্ত নেই। উপরন্তু মেলটির পাল্টা জবাব দিলে তা ‘বাউন্স’ করছে, মানে ফেরত চলে আসছে। তা হলে?

সাইবার তদন্তকারীদের একাংশের মতে, অনেক সময় প্রযুক্তির সাহায্যে ‘ভার্চুয়াল’ ই-মেল তৈরি করা হয়। দেখা হচ্ছে, এখানে তা-ই হয়েছে কি না। প্রসঙ্গত, হুমকি-মেলে যে ১৫ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ পাউন্ড দাবি করা হয়েছে, তা দিতে বলা হয়েছে ‘অনলাইন ওয়ালেট’ (এমন অ্যাকাউন্ট, যা মোবাইল নম্বর বা ই-মেল দিয়েই খোলা যায়, নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র লাগে না) মারফত। সব দেখে-শুনে সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এতে আন্তর্জাতিক হ্যাকার চক্র জড়িত থাকতে পারে। এমন অপরাধ দিন দিন বাড়ছে।’’

কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি নিতে রাজি নন। কলকাতা বিমানবন্দরের টার্মিনালের ভিতরে সিআইএসএফ, আর বাইরে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ এ দিন রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েছে। বিধাননগর পুলিশের এডিসিপি (বিমানবন্দর) জয় টুডুর কথায়, ‘‘প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ নিরাপত্তা-আধিকারিকদের বক্তব্য, এ যাবৎ দেখা গিয়েছে, এই জাতীয় হুমকির প্রায় ৯৯% ভুয়ো। কিন্তু তাই বলে নতুন হুমকিকে হাল্কা ভাবে নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। দেশের সব বিমানবন্দরে কঠোর নিরাপত্তা সব সময়েই বলবৎ। টার্মিনালের ভিতরে বিভিন্ন স্তরে যাত্রী, বিমানকর্মী বা বিমানবন্দরকর্মীদের মালপত্র ও দেহ তল্লাশি হয়। সুরক্ষা-অফিসারেরা জানাচ্ছেন, নাশকতার হুমকি দিয়ে বার্তা এলে তার ধরন অনুযায়ী বন্দোবস্ত হয়। যেমন, নির্দিষ্ট উড়ানে ‘বোমা রাখা আছে’ গোছের হুমকি পেলে এক ধরনের ব্যবস্থা। আবার টার্মিনাল উড়িয়ে দেওয়া বা বিমানবন্দরে বোমা রাখার বার্তা পেলে অন্য ব্যবস্থা। ‘‘কারণ টার্মিনাল খালি করে, প্রত্যেককে বার করে দিয়ে তল্লাশি কার্যত সম্ভব নয়।’’— বলছেন এক অফিসার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement