ফাইল চিত্র।
যে কোনও মূল্যে একশো শতাংশ হিংসামুক্ত নির্বাচন করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। আর সেই লক্ষ্যেই অপরাধ এবং অপরাধীদের সম্পর্কে একের পর এক তথ্য পুলিশের কাছ থেকে সংগ্রহ করছে তারা। ভোটের সময়ে পুলিশের তরফে যাতে কোনও রকম গাফিলতি বা ঢিলেমি না থাকে, তা নিশ্চিত করতেই অনেক আগে থেকে কোমর বাঁধছেন কমিশনের কর্তারা। এ বার ডিসেম্বর মাস থেকে পুলিশ যে সব অস্ত্র, বোমা ও বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করেছে, তার পূর্ণাঙ্গ হিসেব চেয়ে পাঠাল কমিশন। সেই সঙ্গে, যে সব দাগি অপরাধী জামিন পেয়ে কারাগারের বাইরে রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেই তথ্যও চেয়েছেন কমিশনের কর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের তরফে শনিবার লালবাজারের কাছে একটি নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সেই নির্দেশে প্রতিটি থানার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে চলতি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কী পরিমাণ বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র, কার্তুজ, বোমা এবং অন্য বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে কত পরিমাণ বেআইনি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তারও হিসেবে চেয়েছে কমিশন। সূত্রের খবর, লালবাজার প্রতিটি থানাকে ওই নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছিল। থানাগুলি সোমবারের মধ্যে তাদের রিপোর্ট লালবাজারকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজ্যে আসতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ওই বেঞ্চের প্রতিনিধিদের। তার আগেই কমিশন অস্ত্র এবং বিস্ফোরক সংক্রান্ত পুলিশি রিপোর্ট নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে। পুলিশকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে ওই রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ডিসেম্বরের গোড়া থেকে অপরাধ দমনে পুলিশ বা থানাগুলি কী কী পদক্ষেপ করেছে, শনিবার রাতে পাঠানো ওই নির্দেশিকায় তা-ও জানতে চেয়েছে কমিশন। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় কার্যবিধির ১০৭, ১০৯ এবং ১১০ ধারা অনুযায়ী কত জন দুষ্কৃতীর কাছ থেকে মুচলেকা লেখানো হয়েছে, তারও বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। দাগি ও পরিচিত দুষ্কৃতীরা যাতে কোথাও গোলমাল পাকাতে বা হাঙ্গামা বাধাতে না পারে, তার জন্য তাদের কাছ থেকে কখনও সখনও মুচলেকা লিখিয়ে আদালতে তা জমা দেওয়া হয়।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, নির্বাচন কমিশন যা যা তথ্য চেয়েছে, নির্দিষ্ট ফর্মে পূরণ করে থানাগুলি তা পাঠিয়ে দিয়েছে। এত দিন পর্যন্ত ১৫ দিনে এক বার করে কমিশনকে বিভিন্ন রিপোর্ট পাঠাতে হচ্ছিল। এ বার থেকে কিছু কিছু রিপোর্ট প্রতিদিন পাঠাতে হবে। তবে অস্ত্রশস্ত্র কিংবা বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করার হিসেব শনিবারের নির্দেশিকাতেই প্রথম চাওয়া হল। এর আগে দাগি অপরাধী এবং জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযুক্তদের তালিকাও কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুলিশের তরফে।