দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে জটমুক্ত হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প। বিবাদী বাগ এলাকার তিনটি প্রাচীন সৌধের তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার অনুমতি মিলেছে। এ বার জট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই মেট্রোর কাজ যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সে জন্য কোমর বেঁধে নেমে পড়ল রাজ্য পরিবহণ দফতর এবং কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে।
পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এখন মূল কাজ দু’টি। এক, বিবাদী বাগ থেকে মিনিবাস স্ট্যান্ড সরিয়ে দেওয়া। দুই, এসপ্ল্যানেড চত্বরে ট্রাম ডিপো সরিয়ে দিয়ে ওই জমি মেট্রোর হাতে সরকারি ভাবে তুলে দেওয়া। পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, মাস দুয়েকের মধ্যে এসপ্ল্যানেড ট্রাম ডিপো চত্বর সরকারি ভাবে তুলে দেওয়া হবে মেট্রোর হাতে। অন্য দিকে, বিবাদী বাগ মিনিবাস স্ট্যান্ড নিয়ে সিদ্ধান্তও হয়ে গিয়েছে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘মেট্রো কর্তৃপক্ষ যে দিন চাইবেন, সে দিনই বিবাদী বাগ মিনিবাস স্ট্যান্ড দিয়ে দেওয়া হবে।’’
দফতর সূত্রে খবর, বিবাদী বাগের পাশেই একটি জমি মিনিবাসের মালিকদের কিছু দিনের জন্য অস্থায়ী ভাবে স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহারের জন্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে মালিকেরা রাজি। ‘মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র নেতা অবশেষ দাঁ বলেন, ‘‘সরকার বিকল্প যে জমি দিয়েছে, তাতে অস্থায়ী ভাবে কাজ চলবে। বেশ কিছু বাস প্রয়োজন হলে বিবাদী বাগে দাঁড়াবে না। যাত্রী নামিয়ে ফিরে যাবে।’’
ট্রামের ক্ষেত্রেও কাজ অনেকটাই এগিয়েছে বলে জানাচ্ছেন ‘ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানি’ (সিটিসি)-র কর্তারা। সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অনুমতি পেয়ে গিয়েছি। ডিপো ছেড়ে দেওয়ার আগে বিকল্প ট্রামলাইন তৈরির জন্য মাস দুয়েক সময় লাগবে। তার পরেই ওই জমি মেট্রোর ব্যবহারের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে।’’ সিটিসি সূত্রের খবর, বিকল্প ট্রামলাইন তৈরির বরাত ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি)-কে দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরুও করেছে।
সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে পাতালপথে এসএন ব্যানার্জি রোড, ধর্মতলা, বিবাদী বাগ হয়ে মেট্রো গঙ্গার তলা দিয়ে গিয়ে হাওড়া ময়দানে শেষ হবে। গঙ্গার তলায় ইতিমধ্যেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে।
মেট্রো-কর্তারা মনে করেন, হেরিটেজের বাধা কাটায় প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালেই্ শেষ করা যাবে। এক মেট্রোকর্তার কথায়, ‘‘চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে বিবাদী বাগ ও এসপ্ল্যানেডের প্রস্তাবিত অংশ কবে মিলবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।