—প্রতীকী চিত্র।
রাস্তায় হঠাৎ বিপদে পড়লে বাস, মিনিবাস বা অ্যাপ-ক্যাবে সওয়ার যাত্রীরা যাতে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠাতে পারেন, তার জন্য প্রযুক্তি-নির্ভর নতুন এক ব্যবস্থা আনতে চলেছে রাজ্য প্রশাসন। ঠিক হয়েছে, বাস-মিনিবাস বা অ্যাপ-ক্যাবে ‘প্যানিক বাটন’ এবং ‘ভেহিক্ল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ (ভিএলটিডি) বসানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তারই সঙ্গে এ বার পুলিশের ১০০ ডায়ালকেও জুড়ে দেওয়া হবে। এর ফলে যে কোনও সময়ে, যে কোনও অবস্থায় কোনও যাত্রী প্যানিক বাটনে চাপ দিলেই পুলিশের কাছে পৌঁছেযাবে বিপদবার্তা। পুলিশ তখন ওই গাড়ি বা বাসের অবস্থান নির্ধারণ করে যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারবে। এর জন্য ওই যাত্রীকে আর ১০০ ডায়ালে ফোন করে সাহায্য চাইতে হবে না। শুধু কলকাতা নয়, সারা রাজ্যেই ধীরে ধীরে চালু হবে এই ব্যবস্থা, যার পোশাকি নাম ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স সার্ভিস সিস্টেম’ (ইআরএসএস)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শহরের সমস্ত যাত্রী পরিবহণকারী বেসরকারি বাণিজ্যিক যানবাহনে এই ইআরএসএস ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে। এই ব্যবস্থায় বাস, মিনিবাস বা অ্যাপ-ক্যাবে কোনও যাত্রী বিপদে পড়লেই প্যানিক বাটন টিপে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সাহায্য চাইতে পারবেন। পুলিশও ওই বার্তা পেয়ে যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে। কলকাতার পাশাপাশি গোটা রাজ্যেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে পুলিশের একাংশ জানিয়েছে। এর আগে তেলঙ্গানায় এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় কলকাতার প্রায় হাজার দুয়েক গাড়িতে এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার ইআরএসএস ব্যবস্থা চালু করা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়েছে। তাতে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তারা। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, এ দিন ওই ব্যবস্থা বলবৎ করার কাজের অগ্রগতি নিয়ে কথা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তা চালু করার চেষ্টা চলছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে যাত্রী পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বাণিজ্যিক গাড়িতে এই ‘প্যানিক বাটন’ এবং ‘ভেহিক্ল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। যার সঙ্গে কলকাতা পুলিশ তাদের ১০০ ডায়ালকে যুক্ত করে দিয়েছে। এর ফলে কেউ বিপদে পড়ে ওই বোতাম টিপলেই সরাসরি গাড়ির অবস্থান জেনে যাবেন ১০০ ডায়ালের নিয়ন্ত্রণকক্ষে বসে থাকা পুলিশকর্মীরা।
কী ভাবে কাজ করবে এই ইআরএসএস পদ্ধতি?
লালবাজার জানিয়েছে, প্রতিটি বাস বা ক্যাবে থাকা ওই প্যানিক বাটনের সঙ্গে যুক্ত থাকছে ১০০ ডায়াল। সেই সঙ্গেই যুক্ত করা হয়েছে ‘ভেহিক্ল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’-কেও। যার সাহায্যে গাড়ির অবস্থান সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। অবস্থান চিহ্নিত করার পরে দেখা হবে, ওই জায়গার কাছাকাছি পুলিশের কোন টহলদারি ভ্যান রয়েছে। সেই ভ্যানকে সেখানে পৌঁছনোর নির্দেশ দেওয়া হবে লালবাজারের তরফে। গোটা বিষয়টি টহলদারি ভ্যানের পুলিশ জানিয়ে দেবে স্থানীয় থানাকে। ফলে, বড় কোনও রকম অপরাধ সংঘটিত হলে অথবা যাত্রী-সুরক্ষা বিঘ্নিত হলে থানা থেকেও কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে পুলিশ পৌঁছে যেতে পারবে বলে আশা লালবাজারের পুলিশকর্তাদের।