ফাইল ছবি।
কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বিশেষত তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আবার সরব হয়েছেন মহেশতলার বিধায়ক, পুরপ্রধান তথা শোভনবাবুর শ্বশুর দুলাল দাস। বৈশাখীদেবীকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলে দুলালবাবু বলেছেন, ‘‘এক জনের ঘরসংসার ভেঙেছেন ওই মহিলা। শিক্ষিকা হয়ে এত গয়না উনি কোথা থেকে পেলেন, তার তদন্ত হওয়া উচিত।’’
‘এক জনের ঘরসংসার ভাঙা’ মানে দুলালবাবু যে নিজের মেয়ে রত্নাদেবীর কথাই বলতে চেয়েছেন, সেটা তাঁর বক্তব্যেই পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, ‘‘রত্নার সঙ্গে শোভনবাবুর বিয়েতে আমার কোনও মত ছিল না। শোভনবাবুর পরিবারের তরফে বলা হয়েছিল, রত্নাকে তাঁরা নিজেদের মেয়ের মতন রাখবেন। আমি আমার ব্যবসার মালিকানার অংশ যেমন মেয়েকে দিয়েছি, শোভনবাবুকেও দিয়েছি। অনৈতিক কিছু তো
করিনি।’’ শোভনবাবু যে মন্ত্রী ও মেয়র-পদে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন, তার জন্যও বৈশাখীদেবীর দিকেই আঙুল তুলছেন দুলালবাবু। তিনি বলেন, ‘‘শুধু ওই মহিলা (বৈশাখীদেবী)-র জন্যই শোভনবাবুর মেয়র ও মন্ত্রিত্ব চলে গিয়েছে। ওই মহিলা এখন আমার বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়াচ্ছেন।’’
কী রকম কুৎসা?
শুক্রবার মহেশতলার বাড়িতে বসে দুলালবাবু জানান, তিনি এক সময় বাসের খালাসির কাজ করেছেন বলে শোভনবাবুর বান্ধবী বিভিন্ন জায়গায় যে-মন্তব্য করেছেন, সেটা তাঁর কানে পৌঁছেছে। ‘‘এটা ঠিক যে, আমরা ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ থেকে এসে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে থেকেছি। তখন কোনও কাজ ছিল না। ওই কাজ করেছি। চুরি-ডাকাতি তো করিনি।’’ তার পরেই বৈশাখীদেবীর জীবনযাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দুলালবাবু। অভিযোগ আনেন তাঁর মেয়ের ঘর ভাঙার।
দুলালবাবুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৈশাখীদেবীর দাবি, তিনি কাউকে অসম্মান করেননি। তবে শোভনবাবু বলেন, ‘‘উনি (দুলালবাবু) খুনের মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন। দীর্ঘদিন এলাকা-ছাড়া ছিলেন। আমি ওঁদের বাড়ির মেয়েকে বিয়ে করেছি। ওঁর মেয়ে কার বাড়িতে আছেন? উনি মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখছেন না কেন!’’ বৈশাখীদেবীর বিরুদ্ধে দুলালবাবুই কুৎসা করছেন বলে অভিযোগ শোভনবাবুর। তাঁর বক্তব্য, এটা কোনও জনপ্রতিনিধির কাজ নয়। জনপ্রতিনিধি হিসেবে দুলালবাবুর উন্নয়নের কথা বলা উচিত। রাজনীতির কথাও বলতে পারেন। ‘‘কিন্তু উনি কুৎসা করছেন। শালীনতা বজায় রাখছেন না।
বৈশাখী আমার বন্ধু। বিপদে আমার পাশে রয়েছে। আমার অনেক আপনজনকে বিপদের সময় পাশে পাইনি। কিন্তু ও রয়েছে। বৈশাখী সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে। তার কাছে গয়না থাকবে না তো কার কাছে থাকবে? আমি আশা করব, উনি সংযত আচরণ করবেন,’’ বলেছেন শোভনবাবু।