যাত্রীদের মালপত্র রাখার জায়গাতে মাদক লুকিয়ে রাখা ছিল। —প্রতীকী চিত্র।
মাদক পাচারের মাধ্যম হিসাবে মাদকের কারবারিরা এখন যাত্রিবাহী দূরপাল্লার বাস ব্যবহার করছে। এমনকি, যাত্রীদের মালপত্র রাখার জায়গাতেই সেই মাদক লুকিয়ে রেখে তা নিয়ে আসা হচ্ছে কলকাতায়। রবিবার মধ্যমগ্রাম থেকে দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতারের পরে এই তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে। জানা গিয়েছে, এর আগেও একাধিক বার দূরপাল্লার ভলভো বাসে ওই একই কায়দায় উত্তরবঙ্গ থেকে মাদক আনা হয়েছে কলকাতায়।
সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের এসটিএফ মধ্যমগ্রাম থেকে ১০০ কেজি গাঁজা সমেত দু’জন মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম সমরজিৎ পণ্ডিত এবং নিত্যানন্দ মজুমদার। দু’জনেরই বাড়ি অসমের নগাঁওয়ে। সূত্রের দাবি, তারা শিলিগুড়ি-কলকাতা রুটের বেসরকারি দূরপাল্লার বাসে যাত্রীদের মালপত্র রাখার জায়গায় ওই মাদক নিয়ে এসেছিল। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, বাসে কেউ যাতে সন্দেহ না করে, তার জন্য তারা ১০০ কেজি গাঁজা ঝাড়ুর প্যাকেটে ভরেছিল। যাতে মনে হবে ঝাড়ুর বান্ডিল যাচ্ছে।
এসটিএফ সূত্রের খবর, ধৃত দু’জনই ‘ক্যারিয়ার’। তারা কোচবিহার থেকে ওই গাঁজা প্রথমে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসে। তার পরে কলকাতামুখী বাসে সেই গাঁজা তোলে। তবে, গাঁজা নিয়ে তারা স্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠেনি। শিলিগুড়ি ছেড়ে কলকাতায় আসার পথে অন্য একটি জায়গা থেকে তারা ওই বাসে ওঠে এবং মালপত্রের জায়গায় গাঁজা লুকিয়ে রাখে। গোয়েন্দারা জানান, যে কায়দায় ওই মাদক দূরপাল্লার বাসে নিয়ে আসা হয়েছে, তাতে বাসের কর্মীদের সঙ্গে পাচারকারীদের যোগসাজশ থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ হিসাবে গোয়েন্দারা বলছেন, ধৃত দুই মাদক কারবারির কাছ থেকে বাসের কোনও টিকিট মেলেনি। জেরার মুখে ধৃতেরা জানিয়েছে, বাসের কর্মীদের সহায়তায় ওই বাসে উঠেছিল তারা।
এসটিএফ জানিয়েছে, শুধু দূরপাল্লার বাসে নয়, ট্রাক বা গাড়িতে করেও ওই রাস্তায় পাদক পাচার হয়েছে। আগে গণপরিবহণ কিংবা যাত্রিবাহী বাস ব্যবহার করা হত না। কিন্তু পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মাদক কারবারিরা এখন যাত্রিবাহী বাসই মাদক পাচারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।