দু’পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার জাদুকরের দেহ

রবিবার দুপুরে গঙ্গায় তলিয়ে যান চঞ্চল। সোনারপুরের বাসিন্দা চঞ্চলের দেহ এ দিন শনাক্ত করেন তাঁর পরিজনেরা। তদন্তকারীরা জানান, খেলা দেখাতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চঞ্চলকে ক্রেনে করে হাওড়া সেতুর নীচে মাঝগঙ্গায় ফেলে দেন তাঁরই লোকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ০১:৫৪
Share:

সোনারপুরের চণ্ডীতলার বাড়িতে চঞ্চল লাহিড়ীর (ইনসেটে) বৃদ্ধ বাবা-মা। সোমবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া জাদুকর চঞ্চল লাহিড়ীর দেহ উদ্ধার হল। সোমবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ দু’টি পা বাঁধা অবস্থায় দেহটি হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর ঘাটের কাছে ভাসতে দেখা যায়। ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে যে গঙ্গার উপরে প্রকাশ্যে বিপজ্জনক স্টান্ট দেখানোর জন্য যখন রবিবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন চঞ্চল, তখন কী ভাবে তা রিভার ট্র্যাফিকের নজর এড়িয়ে গেল?

Advertisement

রবিবার দুপুরে গঙ্গায় তলিয়ে যান চঞ্চল। সোনারপুরের বাসিন্দা চঞ্চলের দেহ এ দিন শনাক্ত করেন তাঁর পরিজনেরা। তদন্তকারীরা জানান, খেলা দেখাতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চঞ্চলকে ক্রেনে করে হাওড়া সেতুর নীচে মাঝগঙ্গায় ফেলে দেন তাঁরই লোকজন। জাদু দেখিয়ে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে চঞ্চলের নিজেরই জলের উপরে উঠে আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি গঙ্গার জলে পড়ার পরেই প্রবল স্রোতে তলিয়ে যান।

চঞ্চলের ভাইপো রুদ্রপ্রসাদ লাহিড়ী এ দিন বলেন, ‘‘কাকা ১৯৯৮ সালে মাঝগঙ্গায় একই কায়দায় স্টান্ট দেখিয়ে সফল হয়েছিলেন। রবিবারেও কাকা গঙ্গায় ডোবার পরে এক বার উঠে এসেছিলেন। কিন্তু তার পরে যে কী হল কিছুই বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রস্তুতিতে খামতি ছিল, দাবি পি সি সরকারের

কলকাতা পুলিশের কর্তারা রবিবারই দাবি করেছিলেন যে চঞ্চল লঞ্চে খেলা দেখানোর অনুমতি নিয়েছিলেন। জলে নামার কোনও অনুমতি তাঁর ছিল না। এমনকি নিজস্ব ডুবুরি-সহ অন্যান্য সতর্কতামূলক কোনও ব্যবস্থাই ওই জাদুকরের সঙ্গে ছিল না। যা রাখার শর্তেই কলকাতা পুলিশ তাঁকে ‘এনওসি’ দিয়েছিল।

আরও পডু়ন: প্রস্তুতিতে খামতি ছিল, দাবি পি সি সরকারের

ওই খেলা দেখাতে চঞ্চলবাবুরা রবিবার দিনের বেলায় ক্রেন এবং দু’টি লঞ্চ নিয়ে জাজেস ঘাট থেকে মাঝগঙ্গায় পৌঁছন। ফলত প্রশ্ন উঠছে যে কেন সে সব দৃশ্য গঙ্গার উপরে টহলদারির দায়িত্বে থাকা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের নজরে পড়ল না। ওই সময়ে পুলিশ চঞ্চল কিংবা তাঁর দলের কাছে অনুমতির শর্ত দেখতে চাইলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলেই মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকদের একাংশও।

এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘মাঝগঙ্গায় ক্রেনে করে জাদুকরকে বেঁধে লঞ্চ থেকে গঙ্গায় ফেলা হচ্ছে। জাদু দেখতে দু’টি লঞ্চে তখন দর্শকেরাও হাজির। দিনেদুপুরে মাঝগঙ্গায় এত কিছু ঘটলেও কেন তার পুলিশের নজর এড়াল সেটাই আশ্চর্যের।’’

আরও পড়ুন: মানুষের চাপেই গোঁ ছাড়লেন ‘বিপ্লবীরা’

কলকাতা পুলিশের ডিসি (বন্দর) ওয়াকার রেজার পাল্টা দাবি, ‘‘নির্ধারিত সময় দুপুর দেড়টার আগেই চঞ্চলবাবু লঞ্চের উপরে ম্যাজিক দেখাতে শুরু করেছিলেন। পুলিশের যাবতীয় শর্ত উপেক্ষা করে জলে ডুবে ম্যাজিক দেখাতে যান। ফলে আমরা বিষয়টি জানতে পারিনি।’’

তবে এই দুর্ঘটনার জন্য সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কোনও মামলা দায়ের করেনি। তবে লালবাজার সূত্রে খবর, অবহেলায় মৃত্যু ঘটানোর দায়ে একটি মামলা রুজু করা হবে। তবে কার বিরুদ্ধে হবে তা ঠিক হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement