প্রতীক্ষায়। ছবি: শৌভিক দে
জলের জোগান বাড়লেও জলের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেলেন না বিধাননগরবাসী। কারণ, পুরনো সরবরাহের পরিকাঠমো। তা ছাড়া সংযুক্ত এলাকায় এখনও অনেকে টালা-পলতার পরিস্রুত জল পাচ্ছেন না। তবে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, জোগান বেড়েছে অনেকটাই। কয়েকটি জায়গায় পুরনো পাইপের কারণে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত তা মিটিয়ে ফেলা হবে। সংযুক্ত এলাকার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মূল বিধাননগরে অধিকাংশ ব্লকেই ভূর্গভস্থ জলের সঙ্গে টালা-পলতার জল মিশিয়ে সরবরাহ করে পুরসভা। সংযুক্ত এলাকায় এর পাশাপাশি ট্যাপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলও সরবরাহ করা হয়। কিন্তু সমস্যা রয়েই গিয়েছে। যেমন, এবি ব্লক। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা আজও শুধু ভূগর্ভস্থ জলই পান। সমস্যার কথা স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট ন’নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখানে টালা-পলতার জল সরবরাহের ব্যবস্থাই গড়ে তোলা যায়নি।’’ কিন্তু কেন পাঁচ বছরেও সেই ব্যবস্থা করা গেল না তার সদুত্তর না দিলেও অনিন্দ্যবাবু বলেন, ‘‘একাধিক বার পুর-কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বোর্ড মিটিংয়ে বার বার বলেছি।’’
পুর-কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, এবি ব্লকে টালা-পলতার জল নিয়ে যাওয়ার খরচ বিপুল। পুরসভার একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়াদও ফুরিয়ে এসেছে। ফলে এখনই পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা মুশকিল।
ভবিষ্যতে এবি ব্লকের সমস্যা মেটানো হবে। ৫০ বছরের পুরনো পরিকাঠামো বদলানোর প্রয়োজন আছে বলে স্বীকার করেছেন পুর-কর্তৃপক্ষও। সম্প্রতি এ জন্যই সমস্যায় ভুগছেন বিএফ ব্লকের একাংশের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পুরসভা কাজ করেনি। প্রতি দিন ৮০০-৯০০ টাকা দিয়ে পুরসভা থেকে ট্যাঙ্কার এনে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। ব্লকের বাসিন্দা মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘পুরপ্রশাসন সমস্যার কথা জানে। কিন্তু স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর তথা ভাইস চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত জানান, জলের সমস্যা হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ সত্য। জলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সমস্যার কথা জানান হয়েছে।
দত্তাবাদ থেকে শুরু করে মহিষবাথান, নয়াপট্টি, বারোকপাট, সর্দারপাড়া, কুলিপাড়ার মতো সংযুক্ত এলাকায় সবাই জলের সংযোগ পাননি। তাই ট্যাপ ওয়াটারই ভরসা।
যদিও অভিযোগ পুরোপুরি স্বীকার করেনি বিধাননগর পুরসভা। চেয়ারম্যান পারিষদ তৃণমূলের অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘জলের জোগান অনেক বেড়েছে। সঙ্কট কোথাও নেই। কিছু ক্ষেত্রে সাময়িক সমস্যা হয়েছে। দ্রুত সমাধানের কাজও শুরু হয়েছে। দলগত ভাবে পরিস্রুত পানীয় জলের দাবি করেছিলাম। ক্ষমতায় এসে রাজ্য সরকার সেই কাজ শুরুও করে দিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এ ব্যাপারে খসড়া প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।