—ফাইল চিত্র।
প্রথমে চলতি বছরের এপ্রিল, তার পরে আগামী ১৫ ডিসেম্বর। দু’দফায় কালীঘাটে স্কাইওয়াক নির্মাণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে ঘোর সংশয় দেখা দিয়েছে।
নির্মাণকাজে দেরি হওয়ায় এর আগে ক্ষোভ গোপন রাখেননি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মে মাসে নবান্নে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একাধিক সরকারি সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে স্কাইওয়াকের নির্মাণকারী সংস্থাকে চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কালীঘাটের মতো ঘিঞ্জি জায়গায় ওই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা একাধিক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নির্মাণ সংস্থার প্রতিনিধিরা। তাঁরা স্পষ্ট এ-ও জানিয়েছেন, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হওয়া মুশকিল। কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে ও কাজ শেষের সময়সীমা যাতে মেনে চলা হয়, তা নিশ্চিত করতে শুক্রবার নির্মাণকারী সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কালীঘাটে বৈঠক করেন কলকাতা পুরসভার ডিজি (সিভিল) পি কে দুয়া। বৈঠকে রেলের সংস্থা রাইটস ছাড়াও পুরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
কালীঘাটে স্কাইওয়াক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। প্রথমে ঠিক ছিল, ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রা মানা যায়নি। তার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো স্কাইওয়াক তৈরির কাজের অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত রিভিউ বৈঠক হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দ্বিধায় নির্মাণ সংস্থা। আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, কালীঘাটের যেখানে স্কাইওয়াক তৈরি হচ্ছে, সেখানে জল ও নিকাশির একাধিক পাইপলাইন রয়েছে যেগুলি ব্রিটিশ আমলে তৈরি। কাজ করতে গিয়ে মাস চারেক আগে ১৫০ মিটার লম্বা ও তিন মিটারের বেশি চওড়া একটি ইটের নিকাশি নালা ফেটে গিয়েছিল। সেটির পাইলিংয়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫০০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ১০ মিটার চওড়া স্কাইওয়াক তৈরিতে খরচ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। এটি নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা পুরসভা। স্কাইওয়াকের একটি দিক কালীঘাট মন্দির থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের দিকে আসবে। আর একটি দিক কালীঘাট থানার পাশ দিয়ে গুরুপদ হালদার রোডের দিকে নামবে।
কাজ শেষ করতে এত দেরি হচ্ছে কেন?
দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, একে তো জায়গাটি ঘন বসতিপূর্ণ। তার উপরে রয়েছে কালীঘাট মন্দিরে আসা পুণ্যার্থীদের ভিড়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিভিন্ন উৎসবের মরসুম। যেমন, ওই অঞ্চলে একাধিক বড় দুর্গাপুজো হয়। তার মণ্ডপ তৈরির জন্য বেশ কিছু দিন নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। আবার স্কাইওয়াক নির্মাণের একটি উপাদান প্রায় দেড় মাস আগে বরাত দেওয়া হলেও হায়দরাবাদ থেকে সেটি আসতে দেরি হচ্ছে। নির্মাণকারী সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের দিকে স্কাইওয়াকের কাজ করতে গিয়ে মাটির নীচে নিকাশি ও জলের পাইপলাইন থাকায় পথ বদল করতে হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৮৫ শতাংশ কাজ হয়ে যাবে। তবে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনা, অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা-সহ কিছু আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হতে আরও দু’মাস লাগতে পারে।’’