Disinfection

Schools: জীবাণুনাশই বড় চ্যালেঞ্জ, বলছে শহরের স্কুলগুলি

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২১ ০৭:৩৩
Share:

ফাইল চিত্র।

সব ঠিকঠাক থাকলে পুজোর পরে খুলতে পারে স্কুলের দরজা, এমনটাই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো পুজোর পরে স্কুল যদি খোলে, তা হলে পরিকাঠামোগত কী কী পরিবর্তন বা মেরামতি দরকার, সেই তালিকা তৈরি করে কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শককে পাঠালেন শহরের সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার-পোষিত স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁদের সঙ্গে একটি অনলাইন বৈঠকেও বসেছিলেন পরিদর্শক খগেন্দ্রনাথ রায়। সেখানেও এ নিয়ে আলোচনা হয়। অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাই জানান, স্কুলভবনকে জীবাণুমুক্ত রাখাটাই হবে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

Advertisement

স্কুলশিক্ষা দফতর জানিয়েছে, স্কুলের যা যা প্রয়োজন, একটি নির্দিষ্ট ফর্মে তা লিখে ইমেল করতে বলা হয়েছিল প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। স্কুলের চেয়ার-টেবিল মেরামতিই হোক বা শৌচালয়ের সংস্কার— সব ধরনের প্রয়োজনের কথাই জানানোর জায়গা ছিল সেই ফর্মে। কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছেন, শহরের অধিকাংশ স্কুলই সেই ফর্ম পূরণ করে পাঠিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি, এ দিনের অনলাইন বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানান, তাঁদের স্কুলের সিসিটিভি খারাপ হয়ে পড়ে আছে। সেটির মেরামতির জন্য টাকা চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। বেলতলা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁদের স্কুলেও বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা খারাপ হয়ে গিয়েছে। স্কুল খুললে মেয়েদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেগুলি ঠিক করা দরকার। সেই সঙ্গে করোনা আবহে স্কুলভবন এবং শৌচালয়ও নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি। কসবার চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গত দু’বছরে দু’টি ঘূর্ণিঝড়ে স্কুলভবনের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই অংশের মেরামতির জন্য আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বিভিন্ন স্কুলে পানীয় জল পরিশোধনের যে যন্ত্র রয়েছে, দেড় বছর ব্যবহার না হওয়ায় বহু জায়গায় সেগুলি খারাপ হয়ে গিয়েছে। এমনটাই জানালেন মিত্র ইনস্টিটিউশনের (ভবানীপুর) প্রধান শিক্ষক রাজা দে। তিনি জানান, কয়েকটি ক্লাসরুমের আলো-পাখাও খারাপ হয়ে গিয়েছে। আবার অনেক জায়গায় ময়লা জমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে শৌচালয়ের নর্দমা। স্কুল খুললে সেই নর্দমাও পরিষ্কার করাতে হবে।

সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ জানালেন, আমপানে তাঁদের স্কুলভবনের বিভিন্ন অংশের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া, স্কুলে ভোটকেন্দ্র তৈরি হওয়ায় সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ প্রচুর লোকের আনাগোনা ঘটেছে। তাতে বেশ কিছু চেয়ার-টেবিল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাপিয়াদেবী বলেন, “প্রতিটি ক্লাসঘরের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসগুলি ঠিক আছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে মেরামত করতে হবে। প্রতিটি ক্লাসঘর, স্টাফরুম ও শৌচাগার জীবাণুমুক্ত করার জন্য জীবাণুনাশক যন্ত্রেরও দরকার।”

পুজোর পরে স্কুল খুললে স্কুলভবন নিয়মিত ভাবে জীবাণুমুক্ত করা অবশ্যই দরকার, জানাচ্ছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। তাঁর মতে, সংক্রমণ ঠেকাতে পড়ুয়াদের ভিড় করে খেলাধুলো করা, একসঙ্গে টিফিন খাওয়া বা প্রার্থনার লাইনে জড়ো হওয়া বন্ধ রাখাই ভাল। অরুণাংশুবাবু বলেন, “এক জন পড়ুয়া ক্লাসরুমের একটি নির্দিষ্ট আসনে বসলেই ভাল হয়। প্রতিদিন স্কুল শুরুর আগে ও পরে ক্লাসরুম জীবাণুমুক্ত করতে হবে। স্কুলে ঢোকার সময়ে মাপতে হবে পড়ুয়াদের শরীরের তাপমাত্রা। শৌচালয়গুলিও নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি।”

‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র মনে করেন, “জীবাণুনাশের একটা কাজ চালানো ব্যবস্থা সব স্কুলই করে নিতে পারবে। কিন্তু কাজটা নিয়মিত ভাবে করতে গেলে শিক্ষা দফতরের সাহায্য দরকার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement