আগুন বা বাড়ি ভেঙে পড়ার মতো দুর্ঘটনায় দমকলের আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। তাই গাড়ির পাশাপাশি এ বার লালবাজারের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (ডিএমজি) কর্মীদের দেওয়া হচ্ছে মোটরবাইক।
লালবাজারের খবর, আপাতত চারটি মোটরবাইক ডিএমজি-কে দেওয়া হবে। তাতে আগুন নেভানোর জন্য থাকবে ফোমের ট্যাঙ্ক, তিরিশ লিটার জলের ট্যাঙ্ক-সহ একাধিক প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। একটি পোর্টেবল পাম্পও থাকবে ওই বাহিনীর সঙ্গে। পুলিশকর্তাদের দাবি, এক-একটি বাইকে দু’জন কর্মী যেতে পারবেন। ফলে একটি বা দু’টি মোটরবাইকে চেপে প্রাথমিক কাজটা দ্রুত সারা যাবে। বস্তুত, আগে দমকলও এমন মোটরবাইক বাহিনী গড়েছিল। কিন্তু সেগুলি কতটা কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে দমকলের অন্দরেই।
কিন্তু পুলিশের এই ‘সক্রিয়তা’র প্রয়োজন কী? লালবাজারের একাংশ বলছেন, আগুন বা বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পুলিশের কন্ট্রোল রুমেও পৌঁছয়। সেই মতো ডিএমজি-কে পাঠানো হয়। কখনও দমকলের কর্মীদের সাহায্য করতেও ডিএমজি-র জওয়ানেরা যান। বহু ক্ষেত্রেই ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছনোর অভিযোগও ওঠে। পুলিশকর্তারা বলেন, গাড়িতে গেলে যানজটে ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। কিন্তু মোটরবাইকে দ্রুত পৌঁছনো যাবে। গাড়ি এবং চালকের জন্য অপেক্ষাও করতে হবে না। এমনকী, উত্তর ও মধ্য কলকাতার অলিগলিতেও মোটরবাইকে যন্ত্রপাতি চাপিয়ে পৌঁছনো সহজ হবে।
পুলিশের একাংশের মতে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে শক্তিশালী করে দমকলের উপরে নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিপদ ঘটলে স্থানীয় থানার পুলিশ ছুটে গেলেও পরিকাঠামোর জন্য দমকলের মুখাপেক্ষী হয়েই থাকতে হয়। অথচ সেই সময়ে কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গেলে তার দায় সামলাতে হয় পুলিশকেই। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর হাতে পরিকাঠামো থাকলে প্রাথমিক কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। তাতে বড় বিপদ এড়ানোও সম্ভব হবে। আপাতত বাহিনী পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে মোতায়েন থাকবে বলে জানা গিয়েছে। লালবাজারের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পুরোটা প্রস্তাব আকারে নবান্নে পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত সম্মতি মিললেই বাইকগুলি পথে নামবে।’’