Corona Virus New variant

কোভিড-বিধি মানতে সক্রিয়তা কই, চলছে তথ্য গোপনের ‘ধারাবাহিকতা’ও

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘করোনার অন্তিম পর্যায়ে আমরা চলছি। সুতরাং, কোভিড থেকে চিরতরে মুক্তি মিলেছে তা কিন্তু নয়।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৭
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

উৎসবের উচ্ছ্বাসে চাপা পড়েছে করোনা-সতর্কতা!

Advertisement

কোভিড নিয়ে দেশ জুড়ে কেন্দ্রের সতর্কতা জারির পরে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা দাবি করছেন, পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। কিন্তু, ভিড়ে উপচে পড়া বর্ষবরণের চিত্র দেখে চিকিৎসকদের একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই কি নজরদারি চলছে? কারণ, কোভিডের ন্যূনতম বিধি অর্থাৎ, মাস্ক পরা বা ভিড় এড়িয়ে চলার বিন্দুমাত্র চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না জনগণের মধ্যে।

বরং, বিধি এড়িয়ে চলার সঙ্গে তথ্য গোপনের প্রবণতাও চলছেই! করোনা নিয়ে ফের সতর্কতার পরিস্থিতিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

গত ১৮ নভেম্বর সব রাজ্যকে করোনাভাইরাসের নতুন উপপ্রজাতি জেএন.১-এর বিষয়ে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তার পর থেকে নতুন বছরের প্রথম দিন, অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত বেসরকারি মতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩০। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে, যা কেন্দ্রের পোর্টালেও নথিবদ্ধ হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, ‘‘করোনা পুরোপুরি চলে যায়নি। কিন্তু, কম হোক বা বেশি, আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা সাধারণের জানা প্রয়োজন।’’

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘করোনার অন্তিম পর্যায়ে আমরা চলছি। সুতরাং, কোভিড থেকে চিরতরে মুক্তি মিলেছে তা কিন্তু নয়। এখন নতুন স্ট্রেনের মাধ্যমে ফের শক্তি সঞ্চয় করে তা ফিরে আসছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর ব্যাখ্যা, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার যে কথা সরকার বলেছে, সেটা পালন করতে হবে। চিকিৎসকেরা বলছেন, গত তিন বছরের অভিজ্ঞতা থেকে সকলেই জানেন করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর উপায়। তাঁদের নতুন করে শেখানোর কিছু নেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, নাগরিক সচেতনতা থেকে সরকারি নজরদারি, সবটাই চলছে মৌখিক ভাবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, এ রাজ্যে ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে এখনও পর্যন্ত ২১ লক্ষ ২৬ হাজার ৬২৫টি নমুনা পজ়িটিভ এসেছে। সেগুলির মধ্যে এমন নমুনাও আছে, যাঁরা একাধিক বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৭০। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ও অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা, দু’টিই ১৩ করে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’টিই সমান হওয়ার অর্থ, ওই সময়কালে কেউ করোনা থেকে সুস্থ হননি। যে ১৩ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে, তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন মিন্টো পার্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিভিন্ন কারণে অস্ত্রোপচার করাতে এসে তাঁদের করোনা ধরা পড়েছে। তবে সকলের অবস্থাই স্থিতিশীল।

অন্য দিকে সূত্রের খবর, রাজ্যে এখনও জেএন.১-র অস্তিত্ব মেলেনি। যদিও ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটার মন্তব্য, করোনা এখন আগুনের ফুলকি। তা থেকেদাবানল ছড়াবে কি না, কেউ জানে না। তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের দুঃসহ স্মৃতি যাতে আবার ফিরে না আসে, তার লড়াইয়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষ— সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য সব চেয়ে জরুরি তথ্য। যার ভিত্তিতে লড়াইয়ের গতিপথ নির্ধারিত হবে।’’ কিন্তু সেই তথ্য কোথায়?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement