নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের মুখে পড়েন ভুবনেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা শঙ্কর এবং তাঁর স্ত্রী
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে মিলল না চিকিৎসা। স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করলেন শঙ্কর শী নামে ব্যক্তি। শঙ্কর সুন্দরবনের বাসিন্দা। বাঘের আক্রমণে গুরুতর জখম হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলেই তাঁর অভিযোগ। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, জরুরি বিভাগ এবং বর্হিবিভাগে শঙ্করের চিকিৎসা হয়েছিল। চিকিৎসক ভর্তির পরামর্শ দেননি বলেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি।
গত ৩ এপ্রিল নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের মুখে পড়েন ভুবনেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা শঙ্কর এবং তাঁর স্ত্রী। বাঘের থাবায় হাত এবং কাঁধে চোট পান। স্থানীয় এক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে আনা হয় বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে। ওই দিন এই হাসপাতালে ১৬ হাজার টাকার উপর বিল হয় তাঁর। ৫ এপ্রিল আবার বর্হিবিভাগে ড্রেসিং করতে আসেন শঙ্কর। তার বিল হয় সাড়ে ৮০০ টাকা।
শঙ্করের দাবি, সেই সময় অস্ত্রোপচার করার জন্য টাকা জমা দিতে বলা হয় তাঁকে। যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে হাসপাতাল। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানবিকতার খাতিরে শঙ্করকে ভর্তি করে চিকিৎসা করা উচিত ছিল হাসপাতালের।”
পরে শঙ্করের গ্রামের বাসিন্দারা চাঁদা তুলে দক্ষিণ বারাসতের ১০ শয্যার একটি নার্সিংহোমে শঙ্করের অস্ত্রোপচার করান। স্থানীয় চিকিৎসক জানিয়েছেন, পরে আবারও অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পরে।
এই মামলার শুনানিতে কমিশন জানায়, শঙ্করের যাবতীয় চিকিৎসা করতে হবে ওই অভিযুক্ত হাসপাতালকে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেই শঙ্করের চিকিৎসা হবে। কমিশনের চিকিৎসকেরাও শঙ্করকে সাহায্য করবেন। তাঁর চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ডে থাকবেন কমিশনের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
পূর্ব বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অনৈতিক কারবার চলার অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানান কমিশনের চেয়ারম্যান। ওই অভিযোগ জানিয়েছেন শুভদীপ ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। পরিকল্পনা করেই চড়া দামে রোগীর পরিবারকে ওষুধ বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ তাঁর।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব বর্ধমান জেলার এডিএম-স্বাস্থ্যকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং যত দিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ওই হাসপাতালের লাইসেন্স নবীকরণ না করারও নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘এটি অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত।”