প্রতীকী ছবি।
অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ফল বেরোলে এ বার মাধ্যমিকে সবাই পাশ করে যাবে। কিন্তু একাদশে ভর্তির জন্য বিষয় নির্বাচন কিসের ভিত্তিতে হবে? সেই জল্পনাই এখন শিক্ষক মহলে।
প্রতি বছর একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে স্কুলগুলি বিষয়ভিত্তিক ন্যূনতম নম্বর ধার্য করে। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এমনিতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নিয়ম হল, একটি বিষয়ে ন্যূনতম নম্বর পেলেই কোনও পড়ুয়া সেটি নিয়ে একাদশে ভর্তি হতে পারবে। কিন্তু মেধা তালিকা তৈরি হয় স্কুলগুলির ধার্য করা ন্যূনতম নম্বর ধরে। এ বছর শিক্ষকদের আশঙ্কা, সমস্যা তৈরি হতে পারে বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হতে গিয়ে। কারণ, কোনও পড়ুয়া ন্যূনতম নম্বর নিয়ে বিজ্ঞানে ভর্তি হলে, পরে তার পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে নানা সমস্যা হবে।
সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, সাধারণত সংসদের ঠিক করা ন্যূনতম নম্বর থেকে স্কুলগুলি একটু বেশি নম্বরকে ন্যূনতম ধরে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করে। বিশেষ করে বিজ্ঞানের বিষয়ে এই কড়াকড়ি বেশি। দেবব্রতবাবু বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে পড়াশোনাই ঠিক মতো হয়নি, সেখানে ন্যূনতম নম্বর ধার্য করব কী ভাবে? সেটা করাও অনুচিত। আবার ন্যূনতম নম্বর না থাকলে অনেকেই ইচ্ছে মতো বিষয় নিয়ে ভর্তি হতে চাইবে। পরে দেখা যাবে, সে ওই বিষয় সামলে উঠতে পারছে না।”
বেলতলা গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমাদের মেয়েরা কে কোন বিষয়ে কেমন, আমরা জানি। কিন্তু বাইরের স্কুলের মেয়েদের বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা জানি না। ফলে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে বেশির ভাগ ঝোঁকে বিজ্ঞান পড়তে চাইলে পরে অসুবিধা হবে।”
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস জানান, প্রতি বারই বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ভিড় বেশি থাকে। এ বার যে মূল্যায়ন হবে, তাতে প্রায় সব পড়ুয়ারই কাউন্সিল নির্ধারিত বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সবাই যদি বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়, পরে তাদের সমস্যা হতেই পারে।
হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত জানান, একাদশে কী কী বিষয় নিয়ে ভর্তি হওয়া যায়, সেই নিয়ে ইতিমধ্যে পড়ুয়ারা খোঁজ শুরু করেছে। ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, মাধ্যমিকের তুলনায় উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রম অনেক বড় ও কঠিন। বিজ্ঞানে আগ্রহী পড়ুয়া ছাড়া অন্যদের পক্ষে সেটা শেষ করা অসম্ভব। তিনি বলেন, “ফলে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে ঢালাও নম্বর পেলেও একাদশে ভর্তিতে বিষয় নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে।”