সমস্যা: মশার আঁতুড়ঘর। ছবি: অরুণ লোধ
কুড়ি-পঁচিশটি কলাগাছ আর তার নীচে আগাছায় ভরে গিয়েছে এলাকা। দীর্ঘ দিন ধরে বৃষ্টির জল জমে রয়েছে। সব মিলিয়ে মশার উপদ্রবে নাজেহাল বাসিন্দারা। অভিযোগ, তবুও হেলদোল নেই কলকাতা পুরসভার। এই অবস্থা বেহালার সৌরেন রায় রোডের আশপাশের এলাকার।
শহরে ডেঙ্গির বাড়াবাড়ির কথা মানতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। কিন্তু বেহালার সৌরেন রায় রোডের একের পর এক বাসিন্দা মশাবাহিত রোগের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। কয়েক জনকে হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। স্থানীয় বাসিন্দা তপন ঘোষের অভিযোগ, ‘‘এলাকার একটি ফাঁকা জমিতে কলাগাছ, জঙ্গল, জলাজমি— সব মিলিয়ে মশার আঁতুড় হয়ে উঠেছে। তার পাশেই রয়েছে দু’টি পুকুরও। সেই পুকুর দু’টিও পানা জমে মজে গিয়েছে। মশার উপদ্রব এতটাই বেড়েছে যে, বেশির ভাগ সময় বাড়ির জানলা-দরজা বন্ধ রাখতে হয়। তা সত্ত্বেও আমার এবং আমার ছোট ছেলের ডেঙ্গি হয়েছে।’’
বাসিন্দারা জানান, পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। মৌখিক ভাবে আবেদন করেও কোনও কাজ হয়নি। তাই বাসিন্দারা মিলিত ভাবে স্থানীয় কাউন্সিলর তথা ১৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। যদিও সুশান্তবাবুর সঙ্গে এ
বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনও সমস্যার কথা আমার জানা নেই। কোনও অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। যদি আসে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ ব্যক্তিগত জমিতে কি পুরসভা মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে পারে? সুশান্তবাবু জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।
যে জমিটি নিয়ে অভিযোগ তার মালিক দীপেন্দ্রকুমার সান্যাল। তিনি বলেন, ‘‘ওটা আমার জমি ঠিকই, কিন্তু ওখানে আমি থাকি না। যিনি ওই জায়গার দেখভাল করেন তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বাসিন্দারা পুরসভার কাছে যে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাতে আমিও সই করেছি। তবে এমন পরিস্থিতির জন্য পুরসভা অনেকটাই দায়ী। জমির পাশেই একটি ভূগর্ভস্থ নালা রয়েছে। দীর্ঘদিন সেটি পরিষ্কার করা হয়নি। জমিটির পূর্ব দিকে একটি খোলা ড্রেন রয়েছে। সেটিও পুরসভা ঠিকমতো পরিষ্কার করে না। ফলে আমার জমি থেকে জল বেরনোর সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পাশের মজা পুকুর দু’টির জল ছাপিয়েও আমার জমিতে ঢুকে পড়ছে। ফলে জমিতে দীর্ঘদিন ধরে জল জমে আছে।’’ দীপেন্দ্রবাবুর দাবি, ওই জমিটির যিনি দেখভাল করেন তাঁকে গাছ কেটে জায়গাটি পরিচ্ছন্ন রাখতে বলেছেন।
যদিও সুশান্তবাবু জানান, নিকাশি নালা নিয়ে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়। ওই জমিটি রাস্তার চেয়ে নিচু হওয়ায় এই সমস্যা হতে পারে বলে মত সুশান্তবাবুর।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘পুরসভা নানা সরকারি ভবন ও হাসপাতালে নিয়মিত মশা দমনের অভিযান চালায়। কোনও ব্যক্তিগত জমি থেকে যদি মশার সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রেও পুরসভা মশা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’