—প্রতীকী চিত্র।
ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল শহরে। মৃতার নাম অণিমা সর্দার (৪৫)। ওই মহিলা এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডেঙ্গি হেমারেজ়িক ফিভারে আক্রান্ত হয়ে শকে চলে গিয়েছিলেন অণিমা। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। সরকারি ভাবে আক্রান্ত বা মৃতের কোনও তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে বেসরকারি সূত্র অনুযায়ী, এই নিয়ে গত কয়েক দিনে রাজ্যে মশাবাহিত ওই রোগে মৃতের সংখ্যা হল আট। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হওয়ায় রাজ্যের মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে কলকাতার মেয়রও প্রতিনিয়ত বৈঠকে বসছেন। একের পর এক নির্দেশিকা জারি করছে স্বাস্থ্য দফতর।
সূত্রের খবর, বারুইপুরের বাসিন্দা অণিমা কলকাতা পুরসভার ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরপুকুরে কয়েক মাস ধরে ভাড়া থাকছিলেন। তিনি পরিচারিকার কাজ করতেন। কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। তাঁকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার অবস্থার অবনতি হওয়ায় অণিমাকে এম আর বাঙুরে স্থানান্তরিত করা হয়।
এ দিন ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে একাধিক নাগরিক মেয়রের কাছে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়া নিয়ে অভিযোগ জানান। উত্তরের তুলনায় দক্ষিণ কলকাতার অভিযোগকারীদের সংখ্যাই ছিল বেশি। অনুষ্ঠান শেষে মেয়র জানান, শহরে অনেক বাড়ি তালাবন্ধ পড়ে থাকে। সেখানে পুরসভা সহজে ঢুকতে পারে না। বহু জমির মালিককেই খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার সেখানে লোকেরা ময়লাও ফেলেন। ওই সমস্ত জায়গায় মশার উপদ্রব বাড়ছে। পুরসভা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। কলকাতায় নির্দিষ্ট কোনও ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সে ভাবে বাড়ছে না বলেও দাবি করে মেয়র বলেন, ‘‘বিভিন্ন পুর স্বাস্থ্য ক্লিনিকে দু’-চার জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। পুরসভা সার্বিক ভাবে নজর রাখছে। শুধু শহর নয়, গ্রামবাংলাতেও ডেঙ্গি ছড়িয়েছে।’’
এ দিকে, ঊর্ধ্বমুখী ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব জেলা কর্তাদের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার দু’দফার বৈঠকের পরে শুক্রবার ফের এক বার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সব জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। পরিচ্ছন্নতা থেকে চিকিৎসা পরিকাঠামো— সব ক্ষেত্রে সরকারের বেঁধে দেওয়া বিধিগুলি যাতে ঠিক ভাবে পালন করা হয়, স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে সে কথাও। একই সঙ্গে, দ্রুত রক্ত পরীক্ষা এবং ফলাফল পাওয়ার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। রোগ এবং রোগের প্রকৃতিতে কোনও বদল হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে তাতেও।
অন্য দিকে সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া, দুয়েরই প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। এমতাবস্থায় ওই দুই রোগের চিকিৎসা ও পরীক্ষা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। যেখানে ডেঙ্গি অথবা ম্যালেরিয়া পরীক্ষা কখন করতে হবে, অথবা দু’টি পরীক্ষা কত দিনের ব্যবধানে করতে হবে, সব বলা রয়েছে। যে সব ব্লকে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির জোড়া আক্রমণ হচ্ছে, সেই সব এলাকায় স্বাস্থ্য দফতর শুক্রবার থেকে শিবিরের আয়োজনও করছে।