police

নিরাপত্তার দাবিতে থানায় গেলেন নিউ টাউনের বাসিন্দারা

সূত্রের খবর, বাসিন্দাদের মতকে গুরুত্ব দিয়ে কী ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, সে বিষয়ে দ্রুত পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৬:০৭
Share:

নজরে: সিসি ক্যামেরার নিরাপত্তা নিউ টাউনের এক আবাসনে। নিজস্ব চিত্র।

নজরদারির পরিকাঠামো বৃদ্ধি থেকে শুরু করে এলাকায় বসবাসকারী বহিরাগতদের সম্পর্কে তথ্যভাণ্ডার তৈরি— নিরাপত্তার স্বার্থে এমন একাধিক দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। এ বিষয়ে সব রকম সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার নিউ টাউনের তিনটি থানায় এমনই বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের সংগঠন ‘নিউ টাউন সিটিজ়েন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’। তবে, পুলিশ ও বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, বহু আবাসনেই নিরাপত্তা বাবদ যে টাকা বরাদ্দ করা হয়, তা যথেষ্ট নয়। আবার বাসিন্দারাও অনেকে ওই খাতে বেশি টাকা দিতে রাজি হন না। এর ফলে ভাল কোনও সংস্থাকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব হয় না।

Advertisement

নিউ টাউনের একটি আবাসনে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে পঞ্জাবের দুই কুখ্যাত সমাজবিরোধীর মৃত্যুর ঘটনার পরে বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, শুধু প্রশাসনের উপরে দায় চাপিয়ে সমস্যা মিটবে না। একযোগে সবাইকে চেষ্টা করতে হবে।

নিউ টাউনের ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনে নিরাপত্তা ও নজরদারিতে একাধিক গলদ রয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদেরই। ওই এলাকায় আবার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার একাধিক আবাসন রয়েছে, যেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর ব্যবস্থায় কড়া নজরদারি চালানো হয়।

Advertisement

এই ঘটনার পরে সমস্ত আবাসনই আরও সতর্ক হতে চাইছে। নিউ টাউনে একাধিক আবাসন তৈরি করছে, এমন একটি নির্মাণ সংস্থার অধিকর্তা সঞ্জয় জৈন জানান, সুরক্ষায় যাতে ফাঁক না থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর জন্য বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন তাঁরা। তবে অন্য বেশ কিছু আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও কাজের কাজ কিছু হয় না।

আগে নিউ টাউনে একটি থানা ছিল। এখন হয়েছে তিনটি। কিন্তু অত বড় এলাকার জন্য ওই তিনটি থানাও যথেষ্ট নয় বলে অভিমত বাসিন্দা ও পুলিশের একাংশের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরক্ষা ও নজরদারির উন্নয়নের স্বার্থেই থানা সম্প্রসারণ এবং পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় আবাসিক সমিতি বা পুলিশ— কারও কাছেই বহিরাগতদের নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য থাকে না। কে মালিক, কে ভাড়াটে, বোঝা দায়। আরও অভিযোগ, কিছু আবাসনে রক্ষীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণও নেই।

বৃহস্পতিবার আবাসিকদের যে সংগঠন থানায় গিয়েছিল, তাদের দাবি, গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে পুলিশি নজরদারি বাড়াতে হবে, ব্লক এলাকায় পুলিশ আরও বেশি করে টহল দেবে, রাস্তায় সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং বহিরাগতদের সম্পর্কে তথ্যভাণ্ডার তৈরি করতে হবে। ওই সংগঠনের তরফে সমীর গুপ্ত জানান, পুলিশ-প্রশাসন সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। বাসিন্দারাও প্রশাসনের সঙ্গে সর্বতো ভাবে সহযোগিতা করবেন। তিনি জানান, পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যেমন, অনেক ব্লক সমিতি বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বাসিন্দাদের সতর্ক করা শুরু করেছে।

আর একটি আবাসনের কর্মকর্তা কল্লোল দাস জানালেন, তাঁরাও নিরাপত্তার বিষয়টিকে বরাবর প্রাধান্য দিয়েছেন। তাঁরও বক্তব্য, সব আবাসনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিধি তৈরি করা হোক।

সি ই ব্লক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা অলক দাস জানান, তাঁদের ব্লকে নিরাপত্তার স্বার্থেই ‘পাড়া সংস্কৃতি’ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। তার জন্য একটি কমিউনিটি হল দরকার। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি জানান, ওই ব্লকের বাসিন্দাদেরও বহিরাগতদের সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।

এনকেডিএ বা হিডকো এ বিষয়ে এখনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ। তবে ওই দুই সংস্থা সূত্রের খবর, বাসিন্দাদের মতকে গুরুত্ব দিয়ে কী ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, সে বিষয়ে দ্রুত পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশের এক কর্তা জানান, বাসিন্দাদের সংগঠন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ন্যূনতম যে যে পদক্ষেপ বাসিন্দাদের করা উচিত, সে বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুলিশও বাসিন্দাদের যতটা সম্ভব সাহায্য করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement