ছবি: সংগৃহীত
কোভিডে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ডেথ সার্টিফিকেটে ধরা পড়ছে বিস্তর ভুল। সেই ভুলের বোঝা কমাতে এ বার জন্ম-মৃত্যুর অনলাইন শংসাপত্র চালু করছে হাওড়া পুরসভা। ভুলের সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি পুরকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতেও এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে মনে করছেন পুরকর্তারা। হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন এই ব্যবস্থা চালু করতে কলকাতা পুরসভার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
হাওড়া জেলায় কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। সেই মৃতদের অনেকের ক্ষেত্রেই নাম-ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্যে ভুল থেকে যাচ্ছে। যার জেরে নাজেহাল হতে হচ্ছে পরিজনদের। ভুল সংশোধন করাতে বার বার হাওড়া পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরে ছুটতে হচ্ছে তাঁদের। এ ছাড়া, বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরকর্মীরাও মনে করছেন, অনলাইন পদ্ধতি চালু হলে লোকজনের সংস্পর্শে আসার ঘটনা কমবে। যার ফলে সংক্রমণের ঝুঁকিও ততটা থাকবে না।
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন চালু হলে ঘরে বসেই জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্রের জন্য আবেদন করা যাবে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে।’’ কোভিড-পর্বের আগে সাধারণ মানুষকে লাইন দিয়েই পুরসভার কাউন্টারে নথিপত্র জমা করতে হত শংসাপত্র পাওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই ভাবে দূরত্ব-বিধি না মেনে হাতে হাতে নথিপত্র জমা দিতে গেলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। শংসাপত্রের অনলাইন ব্যবস্থা চালুর পিছনে সেটাও একটা বড় কারণ বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
দিন কয়েক আগেই ফুলেশ্বরের একটি হাসপাতালে করোনায় মৃত্যু হয় হাওড়ার বেলগাছিয়ার জি রোডের এক বাসিন্দার। হাসপাতাল থেকে যে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তাতে ঠিকানার জায়গায় ‘জি’ রোডের পরিবর্তে জি টি রোড লেখা ছিল। যে হেতু করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে হাসপাতাল পরিজনদের হাতে দেহ তুলে দেয় না, তার ফলে এই ধরনের ভুলভ্রান্তি থাকলেও সঙ্গে সঙ্গে তা দেখে নেওয়ার কেউ থাকছেন না। পরে সেই ভুল সংশোধন করাতে কখনও হাসপাতালে, কখনও বা পুরসভায় ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভুল হাসপাতালের হলেও তা নজরে আসে অনেক পরে।
পুরসভা সূত্রের খবর, অনলাইনের মাধ্যমে এ বার ছোঁয়াচ এড়িয়ে ঘরে বসেই জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্রের আবেদন করা যাবে। এমনকি, কোথাও কোনও সংশোধন করানোর থাকলে তা-ও অনলাইনেই জানানো যাবে সংশ্লিষ্ট পুরকর্মীদের। এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই হাওড়া পুরসভার কিছু কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য কলকাতা পুরসভার কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা নেওয়া হবে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)