প্রতীকী ছবি।
একটি আবাসনের নীচ থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তির দেহ। শনিবার গভীর রাতে, চিৎপুর থানা এলাকার গোপাল মুখার্জি রোডে। মৃত ব্যক্তির নাম আব্দুল হোসেন ওরফে সেন্টিয়া। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি হুগলির দুষ্কৃতী। পুলিশের খাতায় তার বিরুদ্ধে একাধিক খুন এবং তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে তিন ব্যক্তি। ধৃতদের নাম মহম্মদ রাজা, শেখ জাকির এবং শেখ ইজাজ আহমেদ। ধৃতদের আজ, সোমবার আদালতে তোলা হবে।
শনিবার গভীর রাতে আবাসিকদের ফোন পেয়ে পুলিশ আবাসনে ঢুকে দেখে, একটি ফ্ল্যাটের ঠিক তলায় এক মাঝবয়সি ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ পড়ে। পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ১৫ তলা আবাসনের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে দিন কয়েক ধরে ওই চার জন থাকছিল। তাদের সঙ্গে দুই মহিলাও ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শনিবার বেলা বাড়তেই ওই ফ্ল্যাট থেকে চেঁচামেচি শুরু হয়। রাতের দিকে গোলমাল বাড়তে থাকায় আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীরা অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করেন। আবাসিকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটের দরজা খুলতেই দেখা যায়, দুই মহিলা-সহ কয়েক জন মত্ত অবস্থায় রয়েছে।
আবাসিকদের দাবি, তাঁদের দেখেই দুই মহিলা আবাসন ছেড়ে চলে যান। যদিও রবিবার রাতে ওই দুই
মহিলা থানায় গিয়ে তাঁদের আটকে রেখে যৌন হেনস্থা এবং তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন ধৃতদের বিরুদ্ধে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, ফ্ল্যাটটির মালিক মালদহের এক তৃণমূল নেত্রী। ১৬ অক্টোবর তাঁর স্বামী মহম্মদ ইয়াসিন অজমের শরিফ যাওয়ার জন্য মালদহ থেকে রওনা হন। আসার পথে হুগলি থেকে সেন্টিয়াকে এনে ওই ফ্ল্যাটে রেখে যান। ইয়াসিন সঙ্গে রাখেন তাঁর গাড়িচালক জাকির ও রাঁধুনি রাজাকে। ইজাজ কলকাতা পুলিশের সেকেন্ড ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল। তাদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা এবং তোলাবাজির মামলা রুজু হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, এক জন রাজনৈতিক নেত্রীর ফ্ল্যাটে কী ভাবে এক দুষ্কৃতী ও পুলিশকর্মী একসঙ্গে থাকছিল? এতে আরও এক বার রাজনীতি, দুষ্কৃতী এবং পুলিশি যোগসাজশের অভিযোগ স্পষ্ট হল বলেও অভিযোগ অনেকেরই।
কী ভাবে মৃত্যু হল সেন্টিয়ার? তদন্তকারীদের অনুমান, পুলিশ আসছে ভেবে পালাতে গিয়ে ফ্ল্যাটের জানলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে থাকতে পারে সে। ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য এ দিন ধৃতদের আবাসনে আনা হয়। এ দিন লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের আধিকারিকেরাও ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন।