Kolkata Metro

মেট্রোর পরিত্যক্ত স্তম্ভে ফুটে উঠছে করোনার দিনকাল

আকাঙ্ক্ষা মোড়কে ওই ভাস্কর্য রাখার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কাজল গুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৩৭
Share:

সৃষ্টি: মেট্রোর কংক্রিটের স্তম্ভে তৈরি হচ্ছে ভাস্কর্য। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

মেট্রো প্রকল্পের কাজে ব্যবহারের জন্য নিয়ে আসা কংক্রিটের স্তম্ভগুলি পড়ে ছিল রাস্তার পাশেই। এ বার সেই স্তম্ভেই ফুটে উঠবে অতিমারি পরিস্থিতির ছবি। ভাস্কর্যশিল্পীর হাত ধরে করোনার দিনকালের বাস্তব চিত্র প্রাণ পাবে ওই স্তম্ভে। আর পরিত্যক্ত ওই স্তম্ভের ভাস্কর্যেই সেজে উঠবে নিউ টাউনের আকাঙ্ক্ষা মোড়।

Advertisement

নিউ টাউনে মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলছে। আর সেখানেই রাস্তার পাশে পড়ে থাকা মেট্রোর বেশ কিছু স্তম্ভ এক দিন নজরে পড়েছিল শিল্পী রূপচাঁদ কুণ্ডুর। তখনই পরিত্যক্ত স্তম্ভগুলিকে শিল্পে ব্যবহার করার ভাবনা মাথায় আসে তাঁর। সেই মতো হিডকোর কাছে প্রস্তাব দেন তিনি। কোথায় সেই স্তম্ভ রাখা হবে, তার জন্য দু’তিনটি জায়গাও নির্বাচন করেন হিডকো কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে থেকে আকাঙ্ক্ষা মোড়কে ওই ভাস্কর্য রাখার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু শিল্পের জন্য মেট্রোর স্তম্ভকে বেছে নেওয়ার কারণ কী? শিল্পী রূপচাঁদ জানাচ্ছেন, কোনও কিছুই ফেলে দেওয়ার নয়। পরিত্যক্ত কোনও জিনিসকেও যে পুনর্ব্যবহার করে নতুন সৃষ্টি করা যায়, সেটাই দেখাতে চান তিনি। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সাল মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি বিশেষ অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে। তাই কংক্রিটের স্তম্ভের উপরে সেই অতিমারির দিনকালের ছাপই রাখতে চাইছেন তিনি।

Advertisement

সেই মতো গত চার মাস ধরে ওই স্তম্ভগুলিকে আকাঙ্ক্ষা মোড়ে বসানো হয় এবং তার উপরে খোদাই করে শুরু হয় ভাস্কর্য তৈরির কাজ। অতিমারি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার বাস্তব ছবিই ফুটে উঠেছে ওই শিল্পে। প্রায় ২০টি কংক্রিটের স্তম্ভের কোনওটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ক্রন্দনরত মানুষের মুখ, কোনওটিতে আবার বিষণ্ণ মুখ। অতিমারি পরিস্থিতিতে কোভিড-বিধির কথা মেনে চলার বার্তা দিতে স্তম্ভের গায়ে ফুটিয়ে তোলা মুখে পরানো হয়েছে মাস্কও। শিল্পীর কথায়, ‘‘মূলত করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের কী অবস্থা হয়েছে, সেটাই বিভিন্ন অভিব্যক্তির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। সেই মুখে থাকছে মাস্কও।’’ সৌন্দর্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাস্কর্যের মাধ্যমে সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরার মতো সামাজিক বার্তাও সাধারণ মানুষকে দেওয়া যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মেট্রো প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত ওই স্তম্ভগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। কিন্তু সেগুলিকে এ ভাবেও যে সৌন্দর্যায়নের কাজে লাগানো যেতে পারে, তা তাঁরা ভাবতে পারেননি। আর হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলছেন, ‘‘শিল্পী এবং তাঁর সহযোগীরা কংক্রিটের স্তম্ভকে ব্যবহার করে যে ভাস্কর্য তৈরি করেছেন, তা যে শুধু সৌন্দর্যের নিরিখে মূল্যবান তা-ই নয়। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ যে শিক্ষালাভ করেছে, তা-ও মনে করিয়ে দেবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement