অবরুদ্ধ: মিছিলের জেরে থমকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ। সোমবার বিকেলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
শ্যামবাজার যাওয়ার জন্য কলেজ স্ট্রিট থেকে বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ বাসে উঠেছিলেন শ্যামপুকুরের বাসিন্দা কলেজপড়ুয়া রমা বসু। অন্য দিন যেখানে ওইটুকু রাস্তা পৌঁছতে খুব বেশি হলে মিনিট কুড়ি সময় লাগে, মিছিলে আটকে সোমবার সেটাই লেগে গেল প্রায় এক ঘণ্টা।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এ দিন কংগ্রেস, সিপিএম-সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মিছিল ঘিরে মধ্য ও উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় যানজট হয়। তার জেরেই ওই পড়ুয়ার মতো বহু মানুষ যানজটে নাকাল হন।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিলে প্রায় ছ’হাজার মানুষ পা মিলিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। বেলা দু’টোর পর থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেখানে মানুষ এসে জড়ো হতে থাকেন। ফলে এ দিন দুপুর থেকেই সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে যানজট শুরু হয়। মিছিলের কারণে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট, এম জি রোড, বিডন স্ট্রিট, বিবেকানন্দ রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকেল পাঁচটা নাগাদ মহাজাতি সদনের সামনে মিছিল যখন পৌঁছয়, তখন সেটির শেষ প্রান্ত কলেজ স্ট্রিটে। মিছিলের জেরে উত্তর কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বিকেলে বিশাল মিছিল বিবেকানন্দ রোড থেকে গিরিশ পার্কের মোড় হয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ঢোকা মাত্রই সেখানে যানজট শুরু হয়। বিকেল পাঁচটা নাগাদ মহাজাতি সদনের সামনে মিছিল পৌঁছনোর পরেই চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দু’দিকের রাস্তায় গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন দুপুরেও হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে এসইউসিআই-এর মিছিল মৌলালির রামলীলা ময়দানে পৌঁছয়। তার জেরে হাওড়া সেতু, ব্রেবোর্ন রোডে গাড়ি ধীর গতিতে চলেছে। একই ভাবে শিয়ালদহ থেকে মিছিলকারীরা শিয়ালদহ সেতু, এজেসি বসু রোড, মৌলালি মোড় হয়ে রামলীলা ময়দানে পৌঁছয়। ফলে ওই সমস্ত রাস্তাও যানজটের কবলে পড়ে।
যদিও লালবাজারের দাবি, সকাল ও বিকেলে জোড়া মিছিলের পরেও যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। ট্র্যাফিকের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিকেলের দিকে বাম ও কংগ্রেসের যৌথ মিছিলের জেরে যান চলাচলে হাল্কা প্রভাব পড়লেও সকালের দিকে কোনও যানজট ছিল না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল শুরু হওয়ার পরে গাড়ির রুট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রাস্তায় প্রচুর পুলিশ ছিল।