টালা ট্যাঙ্কের ক্ষতি এড়াতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে আগেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছিল কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে টালা ট্যাঙ্কের ক্ষতি এড়াতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে আগেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছিল কলকাতা পুরসভা। ইয়াস-পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য সম্প্রতি পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল টালা ট্যাঙ্ক পরিদর্শনে যায়। পুরসভা সূত্রের খবর, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শতাব্দী প্রাচীন ট্যাঙ্কের কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে তাঁদের নজরে আসেনি। তবে আরও পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানাচ্ছেন পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা।
পুরসভার এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘প্রতি বার যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে যেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়, এ বারেও তাই করা হবে। তবে আপাতদৃষ্টিতে এখনও কোনও ত্রুটি নজরে আসেনি।’’ বর্তমানে টালা ট্যাঙ্কের সংস্কার চলছে। ট্যাঙ্কের চারটি প্রকোষ্ঠের (কম্পার্টমেন্ট) একটি খালি রেখে সে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু ইয়াসের জেরে ট্যাঙ্কের যাতে স্থানিক বিচ্যুতি না-হয়, তাই ঘূর্ণিঝড়ের আগেই চারটি প্রকোষ্ঠে জলভর্তি করে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন সংস্কারের কাজে পরামর্শদাতা হিসেবে নিযুক্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞেরা। যাতে ঝোড়ো হাওয়া সত্ত্বেও জলের ওজনের কারণে ট্যাঙ্কের ভারসাম্য বজায় থাকে, তাই এই প্রচেষ্টা।
অবশ্য আমপানের মতো দাপট যে শহরে ইয়াস দেখাবে না, আবহবিজ্ঞানীরা সেই পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। ভারী বৃষ্টি হলেও ঘূর্ণিঝড়ে হাওয়ার তেমন প্রাবল্য থাকবে না বলেই জানিয়েছিলেন তাঁরা। তবে মাটি থেকে ট্যাঙ্কটি ১১০ ফুট উঁচুতে থাকায় এমনিতেই হাওয়ার বেগ সেটি বেশি পায়। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি বিশেষজ্ঞেরা। পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, আমপানের সময়ে টালা ট্যাঙ্ক নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা ছিল। কারণ, ওই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব পড়ার কথা ছিল এই শহরে।
পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানাচ্ছেন, টালা ট্যাঙ্কের সংস্কারের কাজে ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প-সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথাও মাথায় রাখা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ঘূর্ণিঝড় আমপানের পরীক্ষায় গত বছরেই আমরা পাশ করেছিলাম। তা সত্ত্বেও এ বার আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইনি। তাই টালা ট্যাঙ্ক নিয়ে আগাম সতর্ক ছিল কলকাতা পুরসভা।’’