প্রতীকী ছবি।
করোনার ধাক্কায় চলছিল বাড়ি থেকে কাজ। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আমপান সেটুকুও শেষ করে দিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় যখন সকলকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন কম্পিউটার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন কয়েক জন কর্মী। সেখানে বসেই কাজ করার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু লাভ হয়নি।
মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না। সংযোগ নেই কেব্ল এবং ব্রডব্যান্ডেরও। ফলে দুই ২৪ পরগনার বাসিন্দা তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা বাড়ি থেকেও কাজ করতে পারছেন না। এর জেরে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কায় সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর এবং নিউ টাউনের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির কর্তারা জানাচ্ছেন, দ্রুত মোবাইল এবং ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা না-গেলে বহু কাজ হারাবে শিল্পতালুক। নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ট্রাই এবং সফটওয়্যার পার্ক অব ইন্ডিয়া (এসটিপিআই)-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
পাঁচ নম্বর সেক্টর এবং নিউ টাউন শিল্পতালুকের কর্মীদের বেশির ভাগই আসেন কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনা থেকে। করোনার ধাক্কায় সকলে বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন। কিন্তু ঝড়ে দুই ২৪ পরগনাই বিপর্যস্ত। বিদ্যুৎ এবং নেট সংযোগ না-থাকায় অধিকাংশ কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সেই তুলনায় কিছুটা কাজ করতে পারছেন কলকাতায় থাকা কর্মীরা। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা নগণ্য। বস্তুত, সংস্থাগুলিতে মাত্র ১০-২০ শতাংশ কাজ হচ্ছে। ‘পাঁচ নম্বর সেক্টর স্টেকহোল্ডার্স ফোরাম’-এর সহ-সভাপতি কল্যাণ কর জানান, দুই ২৪ পরগনার অধিকাংশ কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। জানা যাচ্ছে না, তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন। তার মধ্যেও যেটুকু যোগাযোগ করা গিয়েছে, তাতে কর্মীদের কাজ চালানোর চেষ্টাকে বাহবা দিচ্ছেন অনেকে।
কল্যাণবাবু জানান, কবে কাজ শুরু করা যাবে তা জানতে চাইছেন বিদেশি গ্রাহকেরা। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা না-গেলে অন্য জায়গা থেকে কাজ করাবে বিদেশের সংস্থাগুলি। ফলে ভবিষ্যতে আরও ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। সে কারণে কর্মীদের অফিসে এনে কাজ করানো যায় কি না, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে বলে খবর। যদিও লকডাউনের মধ্যে কর্মীদের অফিসে আনলে দূরত্ব-বিধি কতটা মেনে চলা যাবে, সেই সংশয় রয়েছে। ফলে উভয়সঙ্কটে পড়েছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক। নবদিগন্তের এক শীর্ষকর্তা জানান, সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্যে ট্রাই এবং এসটিপিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।