রেশনের দোকানে জমে রয়েছে জল। শুক্রবার, মোমিনপুর বাজারে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের সময়ে মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার প্রশাসনিক প্রচেষ্টাকে এক ধাক্কায় পিছিয়ে দিল ঘূর্ণিঝড় আমপান।
বুধবারের দুর্যোগে শহর ও শহরতলির তিনশোটির মতো রেশন দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দোকানে বৃষ্টির জল ঢুকে বস্তার চাল, চিনি, ময়দা, ছোলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে খাদ্য দফতর। এমনকি, শুক্রবারেও কিছু রেশন দোকান থেকে বৃষ্টির জল বার করা যায়নি।
রমজান উপলক্ষে রেশন দোকানগুলিতে বেশি পরিমাণে চিনি, ছোলা ও ময়দা মজুত করা হয়েছিল। এখন সে সবের দফারফা অবস্থা। শুক্রবার ভেজা বস্তা থেকে চাল বার করে দোকান চত্বরেই শুকোতে দেখা গিয়েছে অনেক ডিলারকে। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা ও শহরতলি মিলিয়ে ২২৫২টি রেশন দোকান রয়েছে। শুধু শহরেই রয়েছে ৯৩৪টি। ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘আমপানের তাণ্ডবে কলকাতা ও শহরতলি মিলিয়ে ৩০০টি রেশন দোকানের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। জল ঢুকে প্রায় ৯০ কোটি টাকার খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়েছে। বৃষ্টির জলে ভিজে বহু নথি নষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে খাদ্যসামগ্রী লেনদেনের ইলেকট্রনিক যন্ত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’ নষ্ট হওয়া খাদ্যসামগ্রী ও বৈদ্যুতিন যন্ত্র বদলাতে শুক্রবার রাজ্যের খাদ্যসচিব পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকিকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন বিশ্বম্ভরবাবু। খাদ্যসচিব বলেন, ‘‘আমাদের আধিকারিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত রেশন দোকানগুলি পরিদর্শন করছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চয়ই নেওয়া হবে।’’
খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, আমহার্স্ট স্ট্রিট, মুচিপাড়া, বেনিয়াপুকুর, বেহালা, মানিকতলা, জোড়াবাগান, ওয়াটগঞ্জ, মোমিনপুর এলাকার রেশন দোকানগুলির অবস্থা ভয়াবহ। বনহুগলি, রিষড়া, শ্রীরামপুর, বজবজ, হাওড়ার বিভিন্ন রেশন দোকানে জল ঢুকে নষ্ট হয়েছে বহু খাদ্যসামগ্রী। শুক্রবার সকালেও ওই সব এলাকার রেশন ডিলারদের বালতি করে দোকানের জল রাস্তায় ফেলতে দেখা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি ফেডারেশনের (খাদ্য দফতর) সাধারণ সম্পাদক সমীরণ রায় বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত ডিলারদের সাহায্যের জন্য মন্ত্রীর কাছে আবেদন করব।’’