সল্টলেকে আমপানের ধ্বংসলীলা। —নিজস্ব চিত্র
আমপানের তাণ্ডবে তখন একে একে ভেঙে পড়ছে দত্তাবাদের কাঁচা বাড়ি। একটি ক্লাব সংলগ্ন মন্দিরের বিশাল বটগাছটি আচমকা মন্দির নিয়ে পড়ল একটি বাড়ির উপরে। সেখানেই ছিলেন ধর্মেন্দ্র ঠাকুর-সহ তিন ভাড়াটে। তাঁদের চিৎকারে ছুটে যান সোনা মণ্ডল-সহ একাধিক প্রতিবেশী। অন্ধকারে আর্তি শুনেই এগিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। শাবল দিয়ে ভগ্নস্তূপ সরিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন স্থানীয়েরাই।
কার্যত বিধ্বস্ত সল্টলেক, রাজারহাট-গোপালপুরের একাধিক এলাকাও। পুরসভা সূত্রের খবর, শুধু সল্টলেকেই প্রায় আড়াই হাজার গাছ পড়েছে। গোটা পুর এলাকায় তিন হাজারেরও বেশি। পাশাপাশি তিনশোর বেশি বাতিস্তম্ভ ভেঙেছে। পাঁচশোর বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রাণহানির খবর নেই। বহু বাসিন্দাকে নিরাপদ জায়গায় রেখে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। বিপর্যয় মোকাবিলা দল, পুরসভা, দমকল এবং বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পুর এলাকায় কাজ করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্ধকারে ডুবে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ফলে পানীয় জলের জোগানও ব্যাহত বহু এলাকায়। মোবাইল এবং টেলিফোন স্তব্ধ অনেক জায়গাতেই। বিভিন্ন এলাকার কাউন্সিলরেরা পুর কর্মীদের নিয়ে সকাল থেকেই গাছ সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কারের কাজে নেমে পড়লেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অনেক দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সকলেই।
পুরসভার প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তাবাদে কমবেশি ২০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় বালির মাঠ এলাকার বাজারটি প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৬ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং নিউ টাউনের মহিষবাথান এলাকা। পাশাপাশি, কেষ্টপুর, বাগুইআটি, রাজারহাট-গোপালপুর এবং রাজারহাট গ্রামীণ এলাকায় গাছ এবং বাতিস্তম্ভ ভেঙে অবরুদ্ধ এলাকা। প্রশাসন সূত্রের খবর, ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য এখনও মেলেনি।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল ও নিকাশি) দেবাশিস জানার কথায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুরকর্মীরা পরিশ্রম করছেন। যে ক্ষতি হয়েছে তা সামলাতে কম করে সাত দিন লাগবে। আপাতত বন্ধ রাস্তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ দিন দত্তাবাদের অবস্থা খতিয়ে দেখেন মহকুমাশাসক সৈকত চক্রবর্তী।