কলকাতা বিমানবন্দরে জমা জলে দাঁড়িয়ে বিমান। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
বিমানের উপরে ভেঙে পড়েছে হ্যাঙ্গারের লোহার কাঠামো। উড়ে গিয়েছে টার্মিনালের করোগেটেড শিট। সে সব কিছুটা সামলে উঠে বৃহস্পতিবার দুপুরেই কলকাতা বিমানবন্দর চালু করে দিলেন কর্তৃপক্ষ। এ দিন দুপুরে রাশিয়া থেকে তিরুঅনন্তপুরম ঘুরে একটি বিমান কলকাতায় নামে। এই শহরে আটকে পড়া ১০০ জন নাগরিককে নিয়ে সেটি উড়ে যায় রাশিয়ায়।
আগামী ২৫ মে থেকে অন্তর্দেশীয় উড়ান চালু হওয়ার কথা। আমপানের তাণ্ডবে যা ক্ষয়ক্ষতি বিমানবন্দরে হয়েছে, তার জন্য অভ্যন্তরীণ উড়ান পরিষেবা চালু করতে সমস্যা হবে না বলে এ দিন জানান বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য। জরুরি ভিত্তিতে টার্মিনালের ছাদ সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সময়ে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় বয়ে যায় বিমানবন্দরের উপর দিয়ে। সেই সময়েই নতুন টার্মিনালের ছাদের কিছু অংশ উড়ে যায়, কিছু অংশ দুমড়ে-মুচড়েও যায়।
কৌশিকবাবু জানান, বিমানবন্দরের ছাদের তিনটি স্তর রয়েছে। একেবারে উপরে করোগেটেড শিটের তলায় ইনসুলিন আছে। তার তলায় আবার ছাদ। ফলে, ছাদের উপরের অংশ উড়ে গেলেও টার্মিনালের ভিতর থেকে আকাশ দেখা যাচ্ছে না। শুধু উপরের স্তর না-থাকায় টার্মিনালে প্রচুর জল ঢুকেছে। সেই জল বার করার সঙ্গে সঙ্গে ছাদ মেরামতির কাজও শুরু হয়েছে।
ঝড়ে কিছু ডালপালা উড়ে এসেছিল পার্কিং বে (যেখানে বিমান দাঁড়ায়), ট্যাক্সি ওয়ে (যে পথে বিমান রানওয়েতে যায়) এবং রানওয়েতে। সে সব পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে নতুন টার্মিনালের পশ্চিম প্রান্তে থাকা দু’টি হ্যাঙ্গার পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। একটি হ্যাঙ্গারের তলায় ছিল বেসরকারি একটি সংস্থার ছোট বিমান ও একটি কলকাতার অন্যতম পুরনো ছোট বিমান।
১৬ ও ১৭ নম্বর হ্যাঙ্গারে এয়ার ইন্ডিয়া এবং অ্যালায়েন্সের কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস ছিল। সে সবও প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর। ওই হ্যাঙ্গারের সামনেই প্রায় হাঁটুজল জমে গিয়েছে। এই সমস্যা কলকাতা বিমানবন্দরে নতুন নয়। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই নারায়ণপুর লাগোয়া এই হ্যাঙ্গারগুলির সামনে জল জমে যায়। কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, যাত্রী-বিমান চলাচলের দিকে কোথাও জল জমে নেই। কিন্তু হ্যাঙ্গারের সামনের এই অংশটা নিচু। পাম্প চালিয়ে জল বার করার চেষ্টা চলছে। তবে নারায়ণপুরের দিকেও জল জমে থাকায় বিমানবন্দরের জল বেরোতে সময় লাগছে।