Cyclone Amphan

আমপানের রোষ থেকে মুক্তি পেল না বটানিক্যাল গার্ডেনও

ওই উদ্যানে থাকা বহু দুষ্প্রাপ্য গাছের ক্ষতি করেছে আমপান। সমূলে উপড়ে দিয়েছে আফ্রিকান বাওবাব কিংবা কল্পতরু গাছটিকে।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০১:৫০
Share:

তছনছ: তাণ্ডবের চিহ্ন রয়ে গিয়েছে উদ্যান জুড়ে। মঙ্গলবার, বটানিক্যাল গার্ডেনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

বয়স হয়েছে অনেকেরই। তাই আমপানের ধাক্কা সইতে পারেনি তারা। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে কেউ মারাত্মক জখম হয়েছে, কারও আবার প্রাণ গিয়েছে!

Advertisement

তবে ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ইন্ডিয়ান বটানিক গার্ডেন’-এর ২৩৩ বছরের ইতিহাসে এমন বিধ্বস্ত অবস্থা আগে কখনও হয়নি বলেই অভিমত সেখানকার আধিকারিক ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেনের প্রাচীন গাছগুলি বহু ঝড়ঝাপটা সয়ে এলেও আমপানের ধাক্কায় ক্ষতি হয়েছে সেখানের প্রায় হাজারখানেক গাছের।

উদ্যান কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ১৭৮৭ সালে কর্নেল রবার্ট কিডের তৈরি, ২৭৩ একর জমির এই উদ্যানে প্রায় ১৩০০ প্রজাতির ১৫ হাজার গাছ রয়েছে। তবে প্রায় ২৬০ বছরের পুরনো বটবৃক্ষটিই এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। ২০১৯ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ৪.৬ একর বা ১.৬ হেক্টর জায়গা জুড়ে থাকা ওই বৃদ্ধ বটগাছের ঝুরি বা শাখার সংখ্যাই হাজার চারেক। আমপান সেই বৃদ্ধ মহীরুহের প্রায় ৪০টি শাখার ক্ষতি করেছে বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা।

Advertisement

পাশাপাশি, ওই উদ্যানে থাকা বহু দুষ্প্রাপ্য গাছের ক্ষতি করেছে আমপান। সমূলে উপড়ে দিয়েছে আফ্রিকান বাওবাব কিংবা কল্পতরু গাছটিকে। মধ্য আফ্রিকার এই গাছ প্রথম মিশরে নিয়ে যান আরবের ব্যবসায়ীরা। পরে সেখান থেকে তা এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। উর্বরতার প্রতীক এই গাছটি কয়েক হাজার বছর বাঁচে এবং ৪০০ লিটার পর্যন্ত জল ধরে রাখতে পারে।

আমপান উপড়ে দিয়েছে বটানিক্যাল উদ্যানের পাগলা গাছ বা ‘ম্যাড ট্রি’-কে। ক্ষতিগ্রস্ত মেহগনি অ্যাভিনিউ-ও। ১৭৯৫ সালে উদ্ভিদ বিজ্ঞানী উইলিয়াম রক্সবার্গ ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে শিবপুরে ওই মেহগনি গাছ নিয়ে আসেন। প্রায় ৩০টি প্রজাতির বাঁশ গাছ, ভেনেজ়ুয়েলা থেকে আনা ‘মাউন্টেন রোজ়’ বা পাহাড়ি গোলাপ গাছ, সসেজ, কুম্ভি, রসগোল্লা, রুদ্রাক্ষ গাছ— আমপানের রোষ থেকে রেহাই পায়নি বহু গাছপালাই। উদ্যানের ভিতরে ১৭ কিলোমিটার হাঁটার জায়গাটিও এখন কার্যত জঙ্গল।

উদ্যানের যুগ্ম অধিকর্তা ও প্রধান কণাদ দাস জানান, ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পর্যায়ের রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রকের কাছে। বিজ্ঞানী ও কর্মীদের দু’টি দল প্রতিদিন ভেঙে পড়া গাছের মূল্যায়ন চালাচ্ছেন। প্রাচীন বটবৃক্ষের শাখাপ্রশাখা-সহ যে সমস্ত গাছ তুলনায় কম ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে তুলে বসানোর চেষ্টা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement