প্রতীকী ছবি
সাইবার অপরাধের দ্রুত কিনারা করতে এ বার কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ডিভিশনে একটি করে সাইবার ল্যাবরেটরি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, সাইবার ল্যাবরেটরি তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। পুজোর আগেই যাতে সেগুলি চালু করা যায়, তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।
বর্তমানে কলকাতা পুলিশের একটি মাত্র সাইবার অপরাধ থানা রয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে চারশো থেকে পাঁচশো অভিযোগ জমা পড়ে সেখানে। তবে বিভিন্ন ডিভিশনেও এখন সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ জানানো যায়। লালবাজারে সাইবার অপরাধ থানার সঙ্গেই রয়েছে একটি সাইবার ল্যাবরেটরি। কিন্তু অভিযোগের পাহাড় জমে থাকায় ওই ল্যাবরেটরির পক্ষেও সময়মতো কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তাই প্রতিটি ডিভিশনে একটি করে পৃথক সাইবার ল্যাব গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগের অধীনে যে সাইবার ল্যাবটি রয়েছে, পুরোদস্তুর সেই রকম পরিকাঠামোই গড়ে তোলা হচ্ছে কলকাতার ন’টি ডিভিশনে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনার কাজও হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারের অফিসেই ওই ল্যাব তৈরি হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতিটি ল্যাবরেটরিতে চার-পাঁচ জন করে সাইবার বিশেষজ্ঞ থাকবেন। সঙ্গে থাকবেন পুলিশকর্মীরাও। তাতে সাইবার অপরাধের তদন্তে অনেকটা সুবিধা হবে। কাজেও গতি আসবে বলে দাবি ওই পুলিশকর্তার।
লালবাজার সূত্রের খবর, সাইবার থানায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো প্রোফাইল খুলে তাতে অশালীন ছবি-ভিডিয়ো পোস্ট করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগই বেশি সংখ্যায় জমা পড়ে। এ ছাড়া, ভুয়ো সাইট তৈরি করে অনলাইন জালিয়াতি সংক্রান্ত প্রচুর অভিযোগও আসে। লকডাউনের জেরে ইন্টারনেটের ব্যবহার বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘আনলক’ পর্ব শুরু হতেই তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাইবার অপরাধও বেড়েছে। ফলে আগের তুলনায় অভিযোগও জমা পড়ছে অনেক বেশি। সেই কারণে তদন্তের কাজও দ্রুত শেষ করা দরকার। সাইবার ল্যাব তৈরি হলে থানার কর্মীদের তদন্তের জন্য লালবাজারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।
সাইবার অপরাধের তদন্তে অভিযুক্তের মোবাইল বা কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক থেকে প্রায়ই তথ্য উদ্ধারের ভার পড়ে সাইবার ল্যাবের উপরে। এ বার থেকে এমন কাজ প্রতিটি ডিভিশনের নিজস্ব ল্যাবেই হয়ে যাবে। তবে ওই রিপোর্ট আদালতে গ্রাহ্য হবে না। পুলিশ জানিয়েছে, আদালতে পেশ করতে হলে নমুনা পাঠাতে হবে রাজ্য বা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে।