প্রতিবাদ: পড়ুয়ার মৃত্যুতে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মোমবাতি নিয়ে জমায়েত। শুক্রবার, আলিপুরে। নিজস্ব চিত্র
স্কুল চত্বরে জলে ডুবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ওই স্কুলের সিসিটিভি-র ‘সাইবার ফরেন্সিক’ পরীক্ষা করাতে চায় পুলিশ। ওই ঘটনার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ তদন্তকারীদের জানান, তাঁদের কাছে সিসিটিভি-র কোনও ফুটেজ নেই। বেশির ভাগ সিসি ক্যামেরা কাজ করছে না বলেও দাবি করেন তাঁরা। এর পরেই গোটা ঘটনাটি জানতে ‘সাইবার ফরেন্সিক’ পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ‘সাইবার ফরেন্সিক’-এ বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়। এ ক্ষেত্রে স্কুলের সিসিটিভি-র কোনও ছবি মুছে দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানা যাবে ওই পরীক্ষায়। এর জন্য শুক্রবার ওই স্কুলের সিসিটিভি এবং হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছেন সাইবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তাঁরা।
গত বুধবার দুপুরে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতাল চত্বরের একটি প্লে-স্কুলে ‘হাইড্রোথেরাপি’র জলে ডুবে মৃত্যু হয় চার বছরের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু সম্বুদ্ধ ঘোষের। সেনা অফিসারদের স্ত্রীদের সংগঠন দ্বারা পরিচালিত ওই স্কুলটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদেরই। ওই ঘটনার পরেই স্কুলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন শিশুটির বাবা শুভজিৎ ঘোষ। বৃহস্পতিবার আলিপুর থানায় তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রিন্সিপ্যাল-সহ তিন জন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অবহেলায় মৃত্যু ঘটানো এবং জুভেনাইল জাস্টিস আইনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানায়, এ দিন থানায় ডেকে পাঠানো হয় অভিযোগকারীকে। তদন্তের স্বার্থে তাঁর কাছ থেকে সম্বুদ্ধের স্কুল ইউনিফর্ম ও জুতো চেয়ে নেয় পুলিশ। এ দিনই আবার অভিভাবকেরা ওই স্কুলের সামনে সম্বুদ্ধের মৃত্যুর বিচার চেয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার দিন কোন কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মী ঘটনাস্থলে ছিলেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছে স্কুলের কাছে। ওই তালিকা হাতে এলে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হবে। সূত্রের দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান হাতে নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল-সহ অভিযুক্ত শিক্ষিকাদের। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী সপ্তাহে তাঁদের ডেকে পাঠানো হতে পারে বলে পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে।