বৌবাজারে বাড়িতে ফাটল (ইনসেটে)। এলাকা ফাঁকা করতে ঘোষণা করছে পুলিশ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
প্রায় আড়াই বছর পর আবার ফিরে এল সেই আতঙ্ক। মেট্রোর কাজ চলাকালীন বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। আতঙ্কে ঘর ছেড়েছে অনেক পরিবার। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মেট্রো আধিকারিকরা। গিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে এবং চৌরঙ্গীর বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্বরূপের দাবি, অন্তত ৮-১০টি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে বুধবার মধ্যরাতে।
বিভিন্ন বাড়িতে ফাটল ধরার পড়ার পরেই মেট্রোর কাজ বন্ধ করেন দিয়েছেন স্থানীয়েরা। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে পুলিশ বাহিনী ও কলকাতা পুরসভার কর্মীরা। পুলিশের তরফে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। যাঁরা বাড়ির ভিতরে আছেন, তাঁদের বাইরে বেরিয়ে আসতে অনুরোধ করা হয়। ইতিমধ্যেই ওই এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র নিরাপদে সরানোর চেষ্টা যৌথ ভাবে করছে মেট্রো ও পুরসভা।
২০১৯ সালে বৌবাজারে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে তৎপর পুরসভা। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন বাড়িতে বিকেল থেকে ফাটল ধরা শুরু হয়েছে। অনেকেই জরুরি জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন। মেট্রো কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, ২০১৯ সালে একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছিল। মেট্রো কর্তৃপক্ষ সেগুলি মেরামত করার পরেও তার কয়েকটিতে এ বারও ফাটল ধরল। তা হলে কি ওই সময় সঠিক ভাবে মেরামতের কাজ হয়নি? এমনই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
তবে এ বিষয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করেনি। তাঁরা শুধু জানিয়েছেন, গত বারের ঘটনার পর মেট্রোর সুড়ঙ্গে নজরদারির জন্য ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। যাতে বড় কিছু ঘটলে সহজেই জানা যায়। ওই ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়াও আধিকারিকেরা সুড়ঙ্গে গিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন, সেখানেও ফাটল ধরে জল ঢুকে পড়ছে কি না।
বুধবার রাতে বিশ্বরূপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘অন্তত ৮-১০টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে সন্ধ্যার পর থেকে। অনেকেই ঘরছাড়া এখন। রাত্রিটুকু তাঁরা যাতে নিরাপদে কাটাতে পারেন, তার ব্যবস্থা করছি আমরা।’’
একই কথা বলেন বিধায়ক নয়নাও। তাঁর কথায়, ‘‘ঘরছাড়ারা যাতে রাতটুকু শান্তিতে ঘুমোতে পারেন, সেই চেষ্টাই করছি। ওঁদের জন্য খাবারদাবারের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।’’