বিপজ্জনক: বাগুইআটি উড়ালপুলে ফাটল। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
ভিআইপি রোডের উপরে ব্যস্ত উড়ালপুল। তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন দমদম পার্কের বাসিন্দা দেবাশিস পাল। হঠাৎই উপরের দিকে চোখ পড়তে থমকে দাঁড়ান তিনি। দেখেন, দমদম পার্ক-বিমানবন্দর উড়ালপুলের একটি সংযোগস্থলে ফাটল ধরেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে ট্র্যাফিক পুলিশের নজরে আনেন দেবাশিস। খবর যায় পুলিশের উপরমহলে। সেখান থেকে পূর্ত (সড়ক) দফতরে। ইঞ্জিনিয়ারেরা এসে ফাটল পরীক্ষা করেন।
এ দিকে, সেতুর ফাটল পরীক্ষা করতে দেখে ভিড় জমে যায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকে। পূর্ত দফতর অবশ্য জানিয়েছে, সেতুর কাঠামোর কোনও ক্ষতি হয়নি। সংযোগস্থলে ফাটল ধরেছে মাত্র। ক্ষতিগ্রস্ত ওই অংশটি দ্রুত মেরামত করা হবে। প্রায় নতুন ওই সেতুতে এমন কাণ্ড ঘটল কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পূর্ত দফতর জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। দীর্ঘ টালবাহানার পরে বছর চারেক আগে চালু হয় এই উড়ালপুলটি। শহরের অন্যতম দীর্ঘ উড়ালপুল এটি। ভিআইপি রোডের উপরে দমদম পার্কে শুরু হয়ে গিয়েছে তেঘরিয়া পর্যন্ত। বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগকারী হওয়ায় সেতুটি গুরুত্বপূর্ণও। ভিআইপি রোডের উপরে এই উড়ালপুলের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। বাম আমলে দু’বার শিলান্যাস হলেও কাজ শুরু করা যায়নি। ২০১২ সালের শেষ দিকে সেতুর কাজ শুরু হয়। চালু হয় ২০১৫ সালে।
উড়ালপুলটি চালু হওয়ার পরেই ভিআইপি রোডের দীর্ঘদিনের যান-যন্ত্রণা এক ধাক্কায় কমে যায় অনেকটা। ছোট গাড়ি তো বটেই, এই উড়ালপুল দিয়ে বড় গাড়িও চলাচল করে। তবে, মাঝেরহাটে সেতু বিপর্যয়ের পরে এই উড়ালপুল বেশি রাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
দমদম পার্ক থেকে বিমানবন্দরের দিকে যেতে কেষ্টপুরের মুখে, যেখানে কংক্রিটের কাঠামো ইস্পাতের কাঠামোর সঙ্গে যোগ হয়েছে সেখানেই এ দিন ফাটল ধরা পড়ে। দেখা যায়, ফাটলের উপরে ঢালাইয়ের একটি বড় অংশ বেরিয়ে এসেছে। তার পরেই আতঙ্ক ছড়ায়। পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়রেরা এবং পুলিশ ফাটল পরীক্ষা করতে এলে ভিড় জমে
যায়। উড়ালপুলের শুরুতেই ফাটল বলে দ্রুত গুজব ছড়িয়ে পড়ে। অনেক গাড়ি উড়ালপুলে না উঠে ভিআইপি রোড ধরে।
তবে পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়ার চন্দন সামন্ত বলেন, ‘‘সেতুর কাঠামোয় কোনও ক্ষতি হয়নি। যানবাহন যাতায়াতের জন্য কম্পনের ফলে ঢালাইয়ের কিছুটা অংশের ক্ষতি হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। দ্রুত ওই জায়গাটি মেরামত করা হবে।’’